ফারাক্কায় কৃষকদের লড়াই আদানী প্রেমী তৃণমূলের বিরুদ্ধে
কাজী মহম্মদ আবুল হাসিব
গত শনিবার মুর্শিদাবাদ জেলার বেনিয়া গ্রামের দাদন'তলা এলাকায় আম-লিচু বাগানের ওপর দিয়ে বিদ্যুতের হাইটেনশান তার টানার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন জমির মালিকরা কারণ তাদের আশঙ্কা এই তার তাদের জমির ওপর দিয়ে গেলে একদিকে যেমন তাদের ফলনের ক্ষতি হবে, তেমনই অন্যদিকে গুন্ডামি করে জমি অধিগ্রহণ করাও সহজ হয়ে উঠবে। ওই ফসলি জমির পাশে বন্ধ্যা জমি আছে, তার ওপর দিয়ে তার টানলে ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে না; কিন্তু তা করা হচ্ছে না। জমির মালিকদের আশঙ্কা যে, একবার যদি তাদের জমির ওপর দিয়ে এই তার টানা হয়, তাহলে গা-জোয়ারির মাধ্যমে বিনা ক্ষতিপূরণে বা নামমাত্র অর্থ প্রদান করে তাদের জমি অধিগ্রহনের পরিস্থিতি তৈরী করা হবে।
ঝাড়খণ্ডের গোড্ডায় আদানি গ্রুপের তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরি হচ্ছে। এখান থেকে উৎপন্ন বিদ্যুৎ বাজার মূল্যের থেকে চড়া দামে বাংলাদেশ সরকারের কাছে বেচার পরিকল্পনা রয়েছে। এই গোড্ডা প্রকল্পের বিদ্যুৎ-এর তারই মুর্শিদাবাদের উপর দিয়ে যাচ্ছে। ওপারের সাধারণ এই প্রকল্পের ফলে আর্থিক ক্ষতির বিরুদ্ধে সরব হলেও বাংলাদেশের শাসকগোষ্ঠীর নিজস্ব আর্থিক স্বার্থ থাকায় তারা মুখে কুলুপ এঁটেছে। আবার এখানকার রাজ্য সরকারও বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে পুলিশ নামিয়ে হেনস্থা, লাঠিচার্জ, পাথর ছোঁড়া প্রভৃতি কাজ 'জনস্বার্থ'-এ করে চলেছে। এই পুলিশি আক্রমণের ফলে কয়েকজনের মাথা ফেটে যায়।গ্রামবাসীদের বক্তব্য অনুযায়ী, তারা আগেই এই অধিগ্রহনের বিরুদ্ধে কোর্টে মামলা করেছে, যা এখনও বিচারাধীন বিষয়। তবুও রাজ্য সরকার কেনো এমন গা-জোয়ারি করছে, তা আজ স্পষ্ট। একদিকে, জমি আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে ক্ষমতায় আসা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একের পর এক জায়গায় জমি অধিগ্রহণ ও উচ্ছেদ প্রক্রিয়া চালু করছেন; অপরদিকে, আদানির প্রজেক্টের সক্রিয় সমর্থনের মাধ্যমে কর্পোরেটদের সেবায় তিনি নিমজ্জিত। কেন্দ্রীয় সরকারের সাথে রাজ্য সরকার কম্পিটিশনে নেমেছে, কে কত বেশি কর্পোরেট বান্ধব, তা প্রমানের উদ্দেশ্যে। এই কম্পিটিশনে সাধারন গরিব চাষীরা উলুখাগড়ার পর্যায়ে পরিণত হয়েছেন।
[বিশেষ সংযোজন: জয় কিষান আন্দোলনের সর্বভারতীয় সভাপতি অভীক সাহা জানাচ্ছেন, ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক লুৎফর রহমান হাইকোর্টে মামলা করেছিলেন এবং সেই মামলায় গতকাল কোর্টের আদেশ ছিল, নোটিশ দিয়ে, শুনানি করে, ক্ষতিপূরণ ধার্য করার পরই কৃষকের জমি ব্যবহার করা যাবে কিন্তু আনন্দবাজার পত্রিকার হেডলাইন হল "আদানিদের নিরাপত্তা দেবে রাজ্য, জানিয়ে দিল হাইকোর্ট"!!!]
কোর্ট নির্দেশিকা সূত্র: জয় কিষান আন্দোলন
Comments
Post a Comment