বাহাত্তর বছরে শিশু


বিমলকান্তি দাশগুপ্ত 


আজ শিশু দিবস
ভারতে
সাধারণতন্ত্রের প্রথম প্রধানমন্ত্রী
জওহরলাল
আজ তাঁর জন্মদিন।
 
শিশুরা আজ মিলিত হবে
বিদ্যালয়ে ক্লাবে নানা সামাজিক সংগঠনে
গান নৃত্য অভিনয়
কলাবিদ্যার যাবতীয় শাখার
অভি প্রদর্শন চলবে সারাদিন
আজ উৎসব শিশুদের।
 
তবে
যে মা, শিশুকে
বাবুদের বারান্দায় শুইয়ে রেখে
ভেতরে ঢুকেছেন
ঘরের কাজে সহায়তা করতে
একটু পরেই বেরিয়ে আসবেন,
 
 
শিশুকে তুলে নিয়ে
আর এক বাড়ি যাবেন
করবেন
একই দৃশ্যের পুনর্গঠন ।
 
যে শিশু ইটভাটায়
কর্মরত মায়ের
গা ঘেঁষে চলেছে
সে নেই আজকের উৎসবে।
 
যে শিশু চায়ের দোকানে
কাপ ডিস ধোওয়ায় ব্যস্ত
কাজ থামিয়ে দেখছে
পথে গান গেয়ে চলা শিশুদের মিছিল।
মালিকের ধমকে সম্বিত ফিরে
কাজে মন লাগায়
 সে নেই আজকের উৎসবে।
 
ফুটপাথে
 চটের শয্যায় শিশুকে দেখিয়ে
পাশে হাত পেতে ব’সে মা—
কিছু বাড়তি অনুগ্রহের আশা তার
ওই শিশু নেই আজকের মিছিলে।
 
উৎসব
 মানে আনন্দ উল্লাস।
 
যে উৎসব সকলকে আনন্দ দিতে পারে না
সে উৎসব সর্বজনীন হয় না।
যে উৎসব অশক্তকে উপেক্ষা করে
সে উৎসব উৎসব নয়
সে এক ধরণের মত্ততা।
আর মত্ততা
মংগলচিহ্ন বহন করে না।
বিপরীত ধ্বংসের আগাম বার্তা
ঘোষণা করে মাত্র ।।

** দেশ স্বাধীন হবার পরে পরেই সারাদেশে বিক্ষোভ। যেমন আশা করা গিয়েছিল, তেমন উন্নতির লক্ষণ দৃশ্যত ছিল না। এই পরিস্থিতিতে বিক্ষোভকারিদের উদ্দেশ্যে প্রথম প্রধানমন্ত্রী পন্ডিত নেহেরু বলে ছিলেন, একটু ধৈর্য ধরতে হবে। কেন না আমাদের রাস্ট্র ‘শিশু রাস্ট্র’। আজ থেকে বাহাত্তর বছর আগের কথা।   


Comments

Popular posts from this blog

ফ্যাসিবাদের উত্থানের যুগে সুবিধাবাদের রমরমা

কমিউনিস্ট পার্টি ও তেলেঙ্গানা আন্দোলনের মহিলা কর্মীরা : কমঃ শর্মিষ্ঠা চৌধুরীর কলমে

কেন্দ্র সরকারের ‘জাতীয় শিক্ষা নীতি’ – একটি শিক্ষা বিরোধী ইস্তেহার