Posts

Showing posts from June, 2023

ভবিষ্যৎ হিন্দুরাষ্ট্রের ‘বর্তমান’ ইমেজ

Image
সায়ন্তন দত্ত  সেঙ্গোল হাতে প্রধানমন্ত্রীর সংসদ ভবনে প্রবেশের ভাইরাল হওয়া ইমেজ বিশালাকার প্রাসাদোপম স্থাপত্যের সামনে ধূ ধূ করা রাজপথ, যার উপর দিয়ে হেঁটে আসছেন সাদা ধুতি পাঞ্জাবী এবং ঘিয়ে রঙের জহরকোট-উত্তরীয় পরিহিত ভারতবর্ষের প্রধানমন্ত্রী। সারা দেশ দেখতে পাচ্ছে তাকে – টেলিভিশন ক্যামেরা তো বটেই, সরকারি দূরদর্শনের একাধিক ক্যামেরাপার্সন নানান অ্যাঙ্গেল থেকে ফলো করছে এই হেঁটে আসা টুকু। সরকারি লাইভ ইউটিউব সম্প্রচারের ( DD INDIA নামের ইউটিউব চ্যানেল ) ভিডিওটি যদি দেখি, দেখতে পাবো এই হেঁটে আসার মধ্যে অন্তত পাঁচবার ক্যামেরার অ্যাঙ্গেল বদল হয়েছে – চেষ্টা করা হচ্ছে বিশালাকার এই নতুন স্থাপত্যের সামনে দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর হেঁটে আসাটুকু ফ্রেম বন্দী করে রাখতে। ফ্রেমে দেখতে পাচ্ছি ইতিউতি ছড়িয়ে থাকা নিরাপত্তারক্ষীদের, বিউগল হাতে কিছু মিউজিশিয়ানদের; আর ক্যামেরা যেহেতু সবসময়েই উদ্দিষ্টের চেয়ে বেশী দেখে, তাই মাঝে মাঝে দেখে ফেলছি গদার আকৃতির টেলিফটো লেন্স হাতে লোকজনদের দৌড়াদৌড়ি করতে। গতকাল, অর্থাৎ ২৯শে মে-র এই ইমেজগুলো যারা সকালবেলা লাইভ দেখছিলেন, তাঁদের কারো কারো কাছে তখনও বোধহয় একটু একটু খটকা

কমিউনিস্ট পার্টি ও তেলেঙ্গানা আন্দোলনের মহিলা কর্মীরা : কমঃ শর্মিষ্ঠা চৌধুরীর কলমে

Image
[ভাঙড় আন্দোলনের অগ্রণী নেত্রী কমঃ শর্মিষ্ঠা চৌধুরীর দ্বিতীয় প্রয়াণ দিবসে (13/06/2023), এই সংকলনের মধ্যে দিয়ে 'The Diligent'-এর শ্রদ্ধাজ্ঞাপন; বিভিন্ন ফেসবুক পোস্ট থেকে সংগৃহীত]  19th August, 2020 (১)  ১৯৪০-এর দশক। অন্ধ্রপ্রদেশে কমিউনিস্ট পার্টি সিদ্ধান্ত নিল আরও বেশি বেশি করে মেয়েদের সমস্ত আন্দোলনে আনতে হবে। সে সময়, মেয়েদের রাস্তায় বেরনো তো দূরের কথা, স্কুলে পর্যন্ত যাওয়ার বিশেষ চল নেই, বাল্য বিবাহই প্রথা। সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, কোনও স্বাধীনতাই নেই। সেই অবস্থায় পার্টির উদ্যোগে দলে দলে মেয়েরা ঘরের বাইরে বেরিয়ে এল, পার্টির কাজে বিপুল উদ্যমে ঝাঁপিয়ে পড়ল। মণিকোন্ডা সূর্যবতী, তাপী রাজাম্মা, কোন্ডাপল্লী কোটেশ্বরাম্মারা রাস্তায় বেরিয়ে পার্টির মুখপত্র 'প্রজাশক্তি' বিক্রি করছেন। ছেলেরা টিটকিরি মারছে, নানাভাবে উত্যক্ত করছে, কিন্তু কমিউনিস্ট মেয়েদের কিছুতেই দমানো যায় না। প্রজা নাট্য মন্ডলী তৈরি হল। নাটকের মাধ্যমে মানুষের কাছে পৌঁছানো হবে। দুঃসাহসী প্রস্তাব এল -- নারী চরিত্রে ছেলে নয়, মেয়েরাই অভিনয় করবে। লোকলজ্জার ভয়ে মেয়েরাই ইতঃস্তত করতে লাগল। পার্টির নেতারা বললেন, কেন তোমর

Off with their heads!!??...

Image
অঙ্কিতা সরকার  বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ইস্যু তৈরি হয় আর আমরা প্রতিবাদ করতে থাকি। চারিদিকে ইস্যুর ঘনঘটা, প্রতিবাদেরও ঘনঘটা, ইস্যুও আসতে থাকে, প্রতিবাদও চলতে থাকে, কিন্তু আসলে সমাজ বদল হয় না। আমরা ব্যস্ত থাকি তাৎক্ষণিক কিছু ঘটনার প্রেক্ষিতে নিজেদের বক্তব্য ব্যক্ত করার জন্য। এর পরিণতিতে একই ঘটনা বারংবার ঘটতে থাকে। তেমনই বারংবার আমদের দেশের বিচার প্রক্রিয়ার অঙ্গ হিসাবে মৃত্যুদণ্ডের কথা উঠে আসে। আমরা জানি যে মৃত্যুদণ্ড এই মুহূর্তে সারা পৃথিবী জুড়ে একটি পরিত্যাজ্য বিষয়। কিন্তু এই মৃত্যুদণ্ডের পক্ষেও যুক্তি দেওয়া হয়। আমাদের দেশের সর্বোচ্চ আদালতের পক্ষ থেকে যেমনটা বলা হয় যে, বিরল থেকে বিরলতম ঘটনা এবং অপরাধের নৃশংসতার ভিত্তিতে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া যেতে পারে। অর্থাৎ এক্ষেত্রে  অপরাধের প্রেক্ষাপট এবং কারণের চেয়ে তার বাহ্যিক রূপের উপর বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।  এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জনগণের ন্যায় বিচারের চাহিদাকে নঞর্থক দিকে পরিবর্তন করা হয় অর্থাৎ অপরাধী মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত হলেই যারা সেই অপরাধের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্থ তারা খুশি। আদতে একটি ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে সারা সমাজে সেই অপরাধ টিক

মণিপুরের অশান্তির উৎস সন্ধানে

Image
মৌ বাছার   মণিপুর আমাদের দেশের উত্তর পূর্বের রাজ্যগুলির একটি এবং এই রাজ্যে স্থলভূমি বা উপত্যকা অঞ্চল এবং পাহাড়ি অঞ্চল উভয়ই রয়েছে। ৯০% পাহাড়ি অঞ্চলে মূলত খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী নাগা এবং কুকিরা থাকে যারা মূল জনসংখ্যার ৩৫ শতাংশ এবং মধ্যবর্তী স্থলভূমি বা উপত্যকা অঞ্চলে থাকে বৈষ্ণবী হিন্দু এবং ইসলাম ধর্মাবলম্বী মেইটেই উপজাতি যারা মূল জনসংখ্যার ৬৫ শতাংশ। আমরা জানি যে বর্তমানে মণিপুরে একটি দীর্ঘস্থায়ী সামাজিক অস্থিরতা চলছে এবং বিভিন্ন উপজাতিরা একে অপরের সঙ্গে রক্তক্ষয়ী সংগ্রামে লিপ্ত রয়েছে। এর ফলে ভারতীয় সেনা এবং আসাম রাইফেলসকে মণিপুরের রাজপথ দখলে রাখার নির্দেশ দিয়েছে সেখানকার ক্ষমতাধীন বিজেপি সরকার। এই প্রবন্ধের মূল উদ্দেশ্য হল এটা খুঁজে বের করা যে এই অশান্ত পরিবেশের মূল কারণগুলি কি কি?  মূল কারণে পৌঁছানোর আগে মণিপুরের রাজনৈতিক ইতিহাস একটু ফিরে দেখা প্রয়োজন। মণিপুর এবং তার ভারতে অন্তর্ভুক্তির ইতিহাস খুবই ঘটনাবহুল এবং বঞ্চনার ইতিহাস। মেইটেই উপজাতিরা বার্মা থেকে মণিপুরের উপত্যকায় এসেছিল আর নাগা এবং কুকি উপজাতিরা পর্বত অঞ্চলে থাকত। মেইটেই রাজ্যের পক্ষ থেকে পর্বত অঞ্চলে বারংবার সৈন্য পা

সুদানের গৃহ যুদ্ধের হাল হকিকত

Image
সুরজিত মন্ডল  ২০২৩-এর এপ্রিল মাস থেকে সুদানে গৃহযুদ্ধ চলছে। দীর্ঘ দিন ধরেই সেখানে একটি সামরিক সরকার ক্ষমতাধীন রয়েছে। এই সামরিক সরকারে আবদেল ফাতেহ আল-বুরহান রাষ্ট্রপ্রধান ছিল এবং তার সহকারী হিসেবে কাজ করছিল মোহাম্মদ হামদান দাগালো হেমেদতি। বুরহান এবং হেমেদতি সুদানের দুটি আলাদা সেনাবাহিনীর নেতা। ২০২৩-এর ১১ই এপ্রিল দেখা যায় যে দাগালো হেমেদতি এবং তার সেনাবাহিনী অর্থাৎ RSF (Rapid Support Forces) সুদানের বিভিন্ন অঞ্চলে আক্রমণ করছে এবং দখল নিচ্ছে। বর্তমানে যুদ্ধের যা পরিস্থিতি তাতে সারা দেশের খুব অল্প অংশই হেমেদতির দখলে রয়েছে। বাকি দেশটি এখনো আবদেল ফাতেহ আল-বুরহানের দখলেই রয়েছে। বুরহানই বর্তমান রাষ্ট্রপ্রধান এবং তার সেনাবাহিনী, যাকে সুদানের মূল সেনাবাহিনী রূপে ধরা হয়, তার নাম হল SAF (Sudanese Armed Forces)। Sudanese Armed Forces এই মুহূর্তে Rapid Support Forces-এর সাথে যুদ্ধে লিপ্ত রয়েছে।  এই গৃহযুদ্ধের প্রেক্ষাপট বুঝতে গেলে আমাদের সুদানের রাজনৈতিক ইতিহাসের দিকে তাকাতে হবে। লক্ষনীয়, সুদানে বহু আফ্রিকান এবং আরবের উপজাতিরা বসবাস করে এবং আরবের উপজাতিরা আফ্রিকান উপজাতিদের উপর বারবার প্রভাব