Posts

Showing posts from January, 2021

প্রসঙ্গ কিটেক্সঃ কেরলে কর্পোরেটদের সরাসরি পঞ্চায়েত দখলের কিসসা

Image
সায়ন নন্দী   টোয়েন্টি টোয়েন্টি !!!  কি অবাক হচ্ছেন? না একদম হবেন না, কেরালার পঞ্চায়েত নির্বাচনে একটি কর্পোরেট কোম্পানী করে দেখালো এক অবিশ্বাস্য ঘটনা। সাল ২০১৫। ২০২০টা দ্বিতীয় ইনিংস মাত্র।  ২০২০-র পঞ্চায়েত নির্বাচনে কেরালার কোচি থেকে মাত্র ২০ কিমি দূরে অবস্থিত একটা ছোট্ট পঞ্চায়েত কিজাখামবালাম'কে দখল করল কর্পোরেট কোম্পানী দ্বারা চালিত একটি দল(!), নাম টোয়েন্টি - টোয়েন্টি। একটি সমগ্র পঞ্চায়েত চলে গেল সরাসরি কর্পোরেট শক্তির হাতে এবং কর্পোরেটদের দালাল পার্টিগুলো রয়ে গেল ব্যাকসিটে। একটাই শুধুমাত্র নয়, তার সাথে তারা সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করেছে মুজহুভাননুরে (১৯টা সিটের মধ্যে ১৫টা), ঐকারাননাডুতে (১৪-র মধ্যে ১৪টা), কুনাথুনাদে (১৬-র মধ্যে ১১টা) এবং ভেঙ্গোলায় (১১টার মধ্যে ৮টা)। কিজাখামবালামে ২০১৫-তে জয়ের ব্যবধান ছিল ১৯টার মধ্যে ১৭টায় (অন্য দুটি সিটে জয়ী হয় কংগ্রেস এবং সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি অফ ইন্ডিয়া পরিচালিত কিটেক্সে'জাত দূষণ বিরোধী আন্দোলনের মঞ্চ 'অ্যাকশান কাউন্সিল এগেইনস্ট কিটেক্স পলিউশান') এবং ২০২০তে তা এসে দাঁড়িয়েছে ১৯টার মধ্যে ১৮তে।   ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যাচ্ছে, কিটেক্স এবং

নারী সম্মান ও নিরাপত্তার দুই সাম্প্রতিক লজ্জাজনক নিদর্শন

Image
মঞ্জুশ্রী সামন্ত  সাম্প্রতিক বোম্বে হাইকোর্ট-এর নাগপুর বেঞ্চের বিচারপতি পুষ্পা গানেদিওয়ালা রায়-এ স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, পোশাক না খুলে, পোশাকের ওপর দিয়ে স্তন বা যৌনাঙ্গে হাত দেওয়া হলে, তা যৌন নিগ্রহের আওতায় পরেনা। পোশাক খুলে বা পোশাকের ভেতর দিয়ে হাত ঢুকিয়ে স্তন বা যৌনাঙ্গ স্পর্শ করলে সেটিই যৌন নিগ্রহের আওতায় পরবে। ত্বকের সাথে ত্বকের (স্কিন টু স্কিন কন্ট্যাক্ট) সংস্পর্শ হতেই হবে, তবেই অপরাধ প্রমাণিত হবে এবং পকসো আইনের ৭ নম্বর ধারা অনুযায়ী অভিযুক্ত শাস্তি পাবে, যার ভিত্তিতে ন্যুনতম তিন বছরের কারাবাস সাজা হবে। বারো বছর বয়সী কিশোরীকে যেহেতু ৩৯ বছর বয়সী পুরুষটি সালোয়ারের ওপর দিয়ে স্তন স্পর্শ করেছিলো, তাই অভিযুক্তকে আইপিসি ধারা ৩৫৪ অনুযায়ী, শ্লীলতাহানির অভিযোগে ১ বছরের কারাবাস সাজা দেওয়া হয়েছে। এদিকে, মধ্যপ্রদেশে-এর মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান দুই সপ্তাহ আগেই জানিয়েছেন, এমন ব্যাবস্থা আনতে চলেছেন, যেখানে মেয়েদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে বাড়ির বাইরে পা দিলেই মেয়েদেরকে পুলিশ স্টেশনে নিবন্ধিত করতে হবে, তাহলে মেয়েদেরই সতর্কতার কথা ভেবে তাদেরকে ট্র্যাক করা হবে সে কোথায় যাচ্ছে না যাচ্ছে তার সন্ধান

আজকের ট্রাক্টর প্যারেডঃ কোন পথে কৃষক আন্দোলন?

Image
সায়ন নন্দী এবারের প্রজাতন্ত্র দিবসের সকালটা অন্যান্য প্রজাতন্ত্র দিবসের সকালের মত ছিল না। ট্রাক্টর প্যারেডের উত্তেজনায় সমগ্র দিল্লী সকাল থেকেই গমগম করছিল। চলমান কৃষক আন্দোলনের অংশ হিসেবে বিশাল ট্রাক্টর প্যারেডের দিক নির্দেশ দিল্লী পুলিশের পক্ষ থেকে ঠিক করে দেওয়া হয়েছিল। সে পথ ধরেই ট্রাক্টর মিছিল এগোতে শুরু করে সকালে। একদিকে সেনার কুচকাওয়াচের মাধ্যমে চলছিল মোদী সরকারের পেশী শক্তির আস্ফালন আর অন্যদিকে কৃষকদের ট্রাক্টর প্যারেড ৭২তম প্রজাতন্ত্র দিবসে আম জনতার আন্দোলনের নতুন ইতিহাস গড়ছিল। কিন্তু পুলিশ যখন নির্ধারিত পথেই কৃষক মিছিলকে এগোতে বাধা দেয় মূল গন্তব্যে পৌঁছানোর পূর্বেই, বারংবার কৃষকদের ওপর ছোঁড়া হতে থাকে কাঁদানে গ্যাস এবং শুরু হয় লাঠিচার্জ, তখন কৃষকদের জমতে থাকা ক্ষোভের স্ফূলিঙ্গ বেরিয়ে আসতে শুরু করে। অর্থাৎ পুলিশের প্রোভোকেশানের ফলেই আন্দোলনকারীদের একাংশ নির্ধারিত পথ থেকে বিচ্যুত হয়। অবশ্য, কবে পুলিশের নির্ধারিত পথে হেঁটে দাবী আদায় করা গেছে? অবাধ্যতাই বিপ্লব আনে।  মিছিলের মুখ লাল কেল্লাতে পৌঁছোয় এবং সেখানে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে দেশের যুব সমাজ। পুলিশের লাঠিচার্জ চলতে থাকে। পৈশাচিক

সুপ্রিম কোর্ট ও দিল্লীর কৃষক আন্দোলন

Image
অভিজ্ঞান চক্রবর্তী   গত ১১ই জানুয়ারী সুপ্রিম কোর্টের অতিনাটকীয় শুনানীর পর বর্তমানে দেশের আইনব্যবস্থার অবস্থান ও তার লাটাইটা যে কার বা কাদের হাতে তা জলের মতো স্বচ্ছ। গত সপ্তাহের শুনানীর পর এ কথা খুব স্পষ্ট যে সুপ্রিম কোর্ট আদতেই কেন্দ্র সরকারকে একটু বকে দিয়ে, কৃষকদের যা হচ্ছে ভালোর জন্যই হচ্ছে, এরকম ছেলে ভোলানো আশ্বাস দিয়েই বাজিমাত করতে চাইছে। কোর্টের এই প্রসিডিংস যে আসলেই একটা ভালো বলিউডি স্ক্রীপ্ট এবং সম্পূর্ণ ভাঁওতাবাজি তা কোর্টের নির্দেশগুলি ভালো করে পর্যালোচনা করলেই বোঝা যাবে। প্রথমেই সরকারকে ভর্ৎসনা করে যেমন একদিকে এই কৃষিআইনকে স্থগিতাদেশ দিয়ে কৃষকদের ভরসা জেতার কৌশল ফেঁদেছে কোর্ট তেমনি অন্যদিকে এই তিন কৃষি আইনকে পর্যালোচনা করার জন্য যে কমিটি কোর্ট গঠন করেছে তার সদস্যদের পরিচয় দেখলেই গোটা খেলাটা স্পষ্ট হয়ে যায়। চারজনের এই কমিটির সদস্যরা হলেন ভারতীয় কিষান ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট ভূপিন্দর সিং মান, যার সংগঠনকে আন্দোলনকারী কৃষকেরা প্রথম থেকেই সরকারের দালাল বলে অভিহিত করে এসেছেন (গত ১৪ই জানুয়ারি তিনি কমিটি থেকে পদত্যাগ করেছেন)। দ্বিতীয়জন হলেন শ্বেতকারী সংগঠনের সভাপতি অনিল ঘানওয়াত যিনি হিন

আবার ইঁদূর হ’

Image
বিমলকান্তি দাশগুপ্ত জাহাজের খোলে জল ঢুকেছে, ইঁদুরেরা টের পেল কি। নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ছোটাছুটি শুরু হয়ে গিয়েছে। কেউ বললেন, না ঠিক তা নয়। এবার ঘরে ফিরবার পালা। সেই কবে মালদা থেকে কংগ্রেসের নেতা, আবু বরকত আতাউর গনি খান চৌধুরি আওয়াজ ছুঁড়েছিলেন, সিপিএম-কে বঙ্গোপসাগরে বিসর্জন দেবেন বলে। পারেন নি। যাবারকালে ব্যাটন দিয়ে গেলেন, সিদ্ধার্থশঙ্কর রায়ের হাতে। না। তিনিও পারলেন না। তবে আশা নিয়ে ভবিষ্যৎ নির্দেশ করে বলে গেলেন, মমতা পারবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রিধারি মস্তানদের দিয়ে সিদ্ধার্থের চেষ্টা সাফল্য পেয়েছিলনা তেমন। তবে জমি তয়ের করে গেলেন। ওপর থেকে নীচে না নেমে নীচকে ওপরে তুলে দিয়ে গেলেন। ভুল শুধরে নিয়ে ফল মিলে গেল। বিশ্বের সেরা শক্তিধরের গিন্নী, নিজে এলেন।   সই পাতিয়ে গেলেন, টালির ঘরে ঢুকে দুধ ফেরি করে বেচা কন্যার সঙ্গে। সুধীজনেরা বললেন, এ কী কাণ্ড। এ কী রুচি। পদের আর কোনো মান মর্যাদা রইল না। ইতরজনেরা বুঝলেন, এবার তাদের দিকে দিন ঘুরেছে। দুর্গা এবার দিদিরূপ ধরে ধরায় এসেছেন। বণেদি বাড়ির খোরপোষের ব্যবস্থা ছেড়ে ঝাঁক বেঁধে জুটলেন ইতরের আখড়ায়। সেখানের রীতি হল মান্যজনকে অমান্য কর। শিক্ষিত ভদ্রজনকে ই

'স্বর্গ যদি কোথাও থাকে, নামাও তাকে মাটির 'পর': কল্যাণী সলভেক্স শ্রমিক ইউনিয়নের আন্দোলন চলছে

Image
সায়ন নন্দী ফুুলবাড়িতে টিইউসিআই-এর সভা দক্ষিণ দিনাজপুরের কল্যাণী সলভেক্স রাইস ব্র‍্যান মিলের শ্রমিক ইউনিয়নের গুরুত্বপূর্ণ সংগঠক আমজাদ মিঞা নামক এক শ্রমিককে কারখানা বহির্ভূত কারণে ছাঁটাই করে দেওয়া, মজুরি চুক্তির রিনিউয়ালে মাসের পর মাস দেরী করা এবং লেবার কমিশনারের কাছে এ সংক্রান্ত ডিসপিউট উত্থাপন করার পরও তা সমাধান না করার বিরুদ্ধে গত ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২০ ট্রেড ইউনিয়ন সেন্টার অফ ইন্ডিয়া (টিইউসিআই) অনুমোদিত কল্যাণী সলভেক্স শ্রমিক ইউনিয়নের সভা হয়। টিইউসিআই-এর পক্ষে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের রাজ্য সভাপতি এবং ভাঙড় আন্দোলনের নেতা কমঃ অলীক চক্রবর্তী। ২৪শে ডিসেম্বর বেলা ৩টের সময়ে ত্রিপাক্ষিক মিটিং-এ কোনো ফয়সালা না হওয়ায় মিলের ভেতরের কোনও মাল বাইরে বের হতে দেওয়া হয় না। সেদিন রাত থেকেই শ্রমিকরা মিলের গেট অবরোধ করে রাখেন। ২৬শে ডিসেম্বর তৃণমূলের ২৫০জন গুন্ডা আগ্নেয়াস্ত্র সহ আন্দোলনরত শ্রমিকদের ওপর হামলে পড়ে। এই হামলাতে প্রচুর শ্রমিক গুরুতরভাবে আহত হন। ইউনিয়ন অফিসে অগ্নি সংযোগ করা হয়। পুলিশ প্রথমে নীরব দর্শক থাকে ও পরে শ্রমিক ধর্না মঞ্চে ব্যাপক লাঠিচার্জের মাধ্যমে কার্যত আন্দোলনকে ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে

কমরেডস্‌, শুধু ‘বিজেপিকে একটাও ভোট নয়’ বলে ফ্যাসীবাদকে রোখা যাবে তো?

Image
সুমিত ঘোষ এ বছরই বিধানসভা নির্বাচন। দিল্লীর চলমান কৃষক আন্দোলনে উজ্জীবিত বামপন্থী মহলে সাম্প্রতিক বিহার নির্বাচনে তেজস্বী দীপঙ্করদের জোটের আসন বৃদ্ধি নতুন একটা তর্জার জন্ম দিয়েছে- ‘ বাংলার রাজনীতিতে প্রধান শত্রু কে ?’। রাজ্যের ধ্রুপদী ডান-বাম সব দলের একটাই উত্তরঃ বিজেপি। এই সিদ্ধান্তেরই রাজনৈতিক প্রতিফলন ‘বিজেপিকে একটাও ভোট নয়’ হ্যাশট্যাগ বা স্লোগানে। কিন্তু প্রশ্ন হল এতে বিজেপি হারবে তো? বিজেপি হারবে তো?! এই প্রশ্নের ভিত্তিতে উক্ত স্লোগানের অনিবার্য পরিণতিঃ নিজেদের ‘কর্মফল’-এর জন্যই আজ ডান-বাম জোটকে মেনে নিতে হবে… এই উপসংহার বাম অ্যাক্টিভিস্টদের ফ্রাস্ট্রেশান তুলে ধরলেও সাধারণ মানুষ সেগুলো শুনবে কেন? বিশ্লেষণ শুরু করি বিজেপি বিরোধী মহান তৃণমূল নেত্রীকে দিয়ে… বাসে ট্রামে চড়লেই বোঝা যাবে যে পথ চলতি মানুষ মমতার বিরুদ্ধে গালাগাল দিচ্ছে । সততার প্রতীকের ফানুশ চুপসে গিয়ে ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে ভরাডুবি ঘটিয়েছে তৃণমূলের। শোভন, শুভেন্দু, সুজাতার গেরুয়া-সবুজ টিকিট কাটাকাটি সমগ্র পার্টিটাকেই সার্কাসে পরিণত করে ফেলেছে। তৃণমূলে থাকাকালীন মুকুলের নেতৃত্বে আঞ্চলিক দাঙ্গাগুলির মাধ্যমে সাম্প্