জুট শ্রমিকদের লকডাউনকালীন বকেয়া মজুরী দেওয়ার রায় দিল হাই কোর্ট
রিপোর্টঃ সায়ন
লকডাউনের প্রকোপে রাজ্যের স্বাস্হ্য পরিষেবার কঙ্কালসার মূর্তি যখন বেরিয়ে আসছে, শ্রমিক এবং পরিযায়ী শ্রমিকদের সমস্যা যখন রুক্ষ থেকে রুক্ষতর রূপ নিচ্ছে, ঠিক সেই সময়তেই উঠে আসছে চট শিল্পের অন্দর থেকে ভয়ানক এক তথ্য।
প্রায় লক্ষাধিক চটশিল্পের শ্রমিকরা অনাহারে ও অবহেলায় দিন কাটাচ্ছেন। এই সংখ্যার মধ্যে বেশকিছু পরিমাণে পরিযায়ী শ্রমিকও আছেন যাঁদের কারো ঠিকানা উত্তরপ্রদেশ তো কারও বিহার। ভাটপাড়াসহ বিস্তীর্ণ এলাকার চটকলগুলি বন্ধ হয়ে রয়েছে। সেখানে কর্মরত শ্রমিকদের বকেয়া মজুরী পর্যন্ত মেটানো হয়নি। উপরন্তু সরকারের ছাঁটাই বন্ধের মেকি আশ্বাসকে একপ্রকার বুড়ো আঙুল দেখিয়ে চলছে ছাঁটাই-এর চোখ রাঙানী। সেখানকার শ্রমিকদের দেওয়া হচ্ছে না লকডাউনকালীন সরকারী রেশন দ্রব্য। রেশনের বিপুল পরিমান দ্রব্যাদী ব্ল্যাক মার্কেটে উধাও হয়ে যাওয়াটা বর্তমানে ওপেন সিক্রেট-এ পরিণত হয়েছে। অনেক জায়গাতে আমরণ অনশন এবং ধর্নার প্রস্তুতি নিচ্ছে শ্রমিকরা ক্ষুধার জ্বালা নিবারণের দাবিতে।
চটকল শ্রমিকরা লকডাউনকালীন মজুরী না পাওয়ায় জীবনধারণের অতি সাধারণ দ্রব্যাদি সংগ্রহ করতে অক্ষম থেকেছেন। তাঁদের মধ্যে যাঁদের বাড়ি অন্য রাজ্যে, তাঁরা ফিরতে পারেননি। রাজ্য সরকার লকডাউনকালীন মজুরী দেওয়ার অনুরোধ করলেও তা তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়েছিল চটকল মালিকদের সংগঠন “ইন্ডিয়ান জুট মিলস অ্যাসোসিয়েশান”। টিইউসিআই রাজ্য সম্পাদক শর্মিষ্ঠা চৌধুরী আইজেএমএ-এর বিরুদ্ধে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন। আজ বিচারপতি টি বি রাধাকৃষ্ণণ এবং অরিজিৎ ব্যানার্জীর ডিভিশন বেঞ্চ এক মাসের মধ্যে জুট মালিকদের লকডাউনকালীন বকেয়া মজুরী শ্রমিকদের দিয়ে দেওয়ার রায় দিয়েছেন। ইতিমধ্যে লুমটেক্স জুট মিলে শ্রমিকরা কিছুটা অ্যাডভান্স আদায় করতে পেরেছিলেন। সেদিক থেকে, আজকের আদালতের রায় শ্রমিকদের মনোবল বাড়াবে। কিন্তু মালিকরা আদালতের রায় কতটা মানবে তা সন্দেহের অবকাশ রাখে, তাই শ্রমিকরাও প্রত্যয়ী যে রাস্তায় অধিকার অর্জনের আন্দোলনও জারী থাকবে।
Comments
Post a Comment