বিদ্যুতের বিলে ইলেক্ট্রিক শকঃ স্বস্তির উপায় কি?
রিপোর্টঃ সনু
লকডাউনের আকাশ আংশিক পরিষ্কার হতেই মানুষ যেখানে রুজী রোজগারের টানে পথে নেমে প্রতিকূল পরিস্হিতির সাথে লড়াই করছে, সেখানেই এ রাজ্যের অন্যতম একচেটিয়া (পশ্চিমবঙ্গের বেশকিছু অঞ্চলের একমাত্র ডিস্ট্রিবিউটর; বাকি অঞ্চলে রয়েছে রাজ্য সরকারের WBSEDCL)) বিদ্যুৎ সরবরাহকারী সংস্হা CESC এক নতুন কারচুপিতে মত্ত।
এমনিতে আমফানের সময়ে CESC-র ঐতিহাসিক ভূমিকা সকলের জানা। দীর্ঘদিন বিদ্যুতের অভাবে নাকাল সাধারণ মানুষ রাস্তায় প্রতিবাদে নামতে বাধ্য হয়েছিল। আগে থেকে ঝড়ের সতর্কতা সত্ত্বেও কর্মীর অভাব এবং গাছ কাটার ক্ষেত্রে পৌরসভা ও পরবর্তীতে সেনার সাথে সমন্বয়ের খামতি পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ করে তুলেছিল। গত ৩রা জুন, SUCI(C) প্রভাবিত ABECA ভূগর্ভস্থ বিদ্যুতের লাইন, বিদ্যুৎপৃষ্টদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ এবং ২০০ ইউনিট ফ্রি বিদ্যুতের দাবী রেখেছিল। রাজ্য সরকারও নিজেদের দায় এড়িয়ে একদা মমতা ব্যানার্জীর বিদেশ সফর সঙ্গীর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনতে কুন্ঠা বোধ করেনি। কিন্তু এই আপাত জনকল্যাণে ব্রতী হওয়ার তৃণমূলের নাটকের সারশূন্যতা প্রকাশ পাচ্ছে বর্তমান ইলেক্ট্রিসিটি বিলের বাস্তবের সাথে সঙ্গতিহীন দেয় টাকার অঙ্কে।
আমফানের ফলে পরিবার পিছু বিদ্যুতের লাইনের তদারকি তলানিতে ঠেকেছিল। জোড়াতাপ্পি দিয়ে চলছিল বিদ্যুৎ পরিষেবা। এরই মধ্যে প্রায় ৩-৪ মাস পর CESC মিটার দেখতে শুরু করেছে কিন্তু যেখানে মিটার রিডিং আলাদা মাসের আলাদাভাবে দেখার কথা, সেখানে তা একই মাসে দেখানো হচ্ছে। নিয়ম অনুযায়ী মাসে পরিবার পিছু বিদ্যুত ব্যবহার বেশি হলে ইউনিট প্রতি দাম বাড়ে, আর বিদ্যুত ব্যবহার কম থাকলে ইউনিট প্রতি দাম কমে। কিন্তু সেই ব্যবস্হাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে CESC বিলের পরিমান অত্যাধিক বৃদ্ধি করে চলেছে এবং বিলের ইউনিট প্রতি হিসাব আড়াই গুণ অতিরিক্ত ধার্য করা হচ্ছে! তিন মাসের রিডিং একমাসে দেখিয়ে, বিদ্যুত খরচ বৃদ্ধির নামে ইউনিট প্রতি দাম বাড়াচ্ছে CESC। পূর্বতন বিদ্যুত মাশুল আন্দোলনের একজন নেতা সোশ্যাল মিডিয়ায় ইতিমধ্যেই দাবী করেছে যে ৩ মাসে মোট ৭৫ ইউনিট কম দামে পাওয়ার জায়গায় মাত্র ২৫ ইউনিট উপলব্ধ হচ্ছে এই কারচুপির ফলে।
যেখানে মানুষের অন্নসংস্হান করাটাই এখন তথৈবচ অবস্থায়, সেখানে এই সংস্হার বর্তমান কারচুপিতে মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে। রাজ্য সরকারের সাথে পরোক্ষ করমর্দনের মাধ্যমেই মুনাফার চূড়ায় পৌঁছে মানুষকে বোকা বানাচ্ছে CESC। মুখে কুলুপ পাওয়ার মিনিস্টার শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের।
মমতার সাথে হাত মিলিয়ে মোদীও ইলেক্ট্রিসিটি ডাকাতিতে শামিল হয়েছে। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন ২০১৪ এবং ২০১৮-র পর আনলকের প্রারম্ভিক পর্বেই আবার ইলেক্ট্রিসিটি আইনে সংশোধনী আনার পক্ষে সওয়াল করেছে। পূর্বতন সংশোধনীগুলি ডিস্ট্রিবিউটার ও সাপ্লায়ারদের ক্ষমতায়ন ঘটিয়েছিল। এবার সরাসরি বেসরকারিকরণের পথে এগোতে চাইছে কেন্দ্র। কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল এবং গেরুয়া রাজ্য সরকারগুলি প্রাইভেট Discom প্রণয়নের সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে। সামান্য ঝড়ের সময়েই প্রাইভেট পরিষেবার নাজেহাল অবস্থা এবং বর্তমান বিল কারচুপিতে ত্রস্ত এ রাজ্যের মানুষ ইতিমধ্যেই শঙ্কিত। প্রাইভেট সংস্থার কারচুপি ঠেকাতে মানুষ সরকারী হস্তক্ষেপ দাবী করে। কিন্তু এই নয়া আইন সংশোধনী সমস্ত ক্ষমতা রাজ্যগুলির হাত থেকে কেড়ে নিয়ে কেন্দ্রের হাতে ন্যস্ত করতে উদ্যত। আর কেন্দ্র সরকারের কর্পোরেট বান্ধব মনোবৃত্তি এখন জনশ্রুতি। কর্পোরেটদের সাহায্যের জন্য কেন্দ্র ইলেক্ট্রিসিটি কন্ট্র্যাক্ট এনফোর্স্মেন্ট এজেন্সি (ECEA) প্রতিষ্ঠা করতে চলেছে! তাছাড়া এই নয়া বিল কয়লা খনির কেনাবেচাতেও পাওয়ার সাপ্লাই সংস্থাদের বিশেষ সুবিধা করে দিতে চলেছে।
লড়াইয়ের কথা এলে, বলতেই হবে যে ABECA-র আন্দোলন সবসময়েই ইস্যুভিত্তিক। বৃহৎ সমস্যাগুলি নিয়ে তাদের বক্তব্য স্পষ্ট নয়। তাছাড়া তৃণমূলের সাথে SUCI(C)-র পরোক্ষ সম্পর্কও সকলের জানা। অন্যদিকে, পূর্বতন বিদ্যুৎ মাশুল আন্দোলন ছিল CESC-র একচেটিয়ার বদলে বিভিন্ন প্রাইভেট সংস্থার অলিগোপলি বা ব্যবসায়ী সমন্বয় প্রতিষ্ঠার আন্দোলন। এই সমন্বয়গুলিতেও কিন্তু দিনের শেষে নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়ার ভিত্তিতে একই কারচুপি করার যে প্রবল সম্ভাবনা দেখা যায় তা অর্থনীতিবিদদের অজানা নয়। সরকারী হস্তক্ষেপ বৃদ্ধির দাবীকে পিছনে ঠেলে কোনো আন্দোলনই সুরাহা করতে পারবে না। সুরাহার পথ আন্দোলনই কিন্তু দাবী হোক সরকারী হস্তক্ষেপের, জাতীয়করণের, সমস্ত গ্রামীণ ও গৃহস্থদের বিদ্যুৎ পরিষেবা দেওয়ার, এক সংস্থাকে কাঠগড়ায় তুলে বাকি কর্পোরেটদের সাথে মধুচন্দ্রিমা নয়।
লকডাউনের আকাশ আংশিক পরিষ্কার হতেই মানুষ যেখানে রুজী রোজগারের টানে পথে নেমে প্রতিকূল পরিস্হিতির সাথে লড়াই করছে, সেখানেই এ রাজ্যের অন্যতম একচেটিয়া (পশ্চিমবঙ্গের বেশকিছু অঞ্চলের একমাত্র ডিস্ট্রিবিউটর; বাকি অঞ্চলে রয়েছে রাজ্য সরকারের WBSEDCL)) বিদ্যুৎ সরবরাহকারী সংস্হা CESC এক নতুন কারচুপিতে মত্ত।
এমনিতে আমফানের সময়ে CESC-র ঐতিহাসিক ভূমিকা সকলের জানা। দীর্ঘদিন বিদ্যুতের অভাবে নাকাল সাধারণ মানুষ রাস্তায় প্রতিবাদে নামতে বাধ্য হয়েছিল। আগে থেকে ঝড়ের সতর্কতা সত্ত্বেও কর্মীর অভাব এবং গাছ কাটার ক্ষেত্রে পৌরসভা ও পরবর্তীতে সেনার সাথে সমন্বয়ের খামতি পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ করে তুলেছিল। গত ৩রা জুন, SUCI(C) প্রভাবিত ABECA ভূগর্ভস্থ বিদ্যুতের লাইন, বিদ্যুৎপৃষ্টদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ এবং ২০০ ইউনিট ফ্রি বিদ্যুতের দাবী রেখেছিল। রাজ্য সরকারও নিজেদের দায় এড়িয়ে একদা মমতা ব্যানার্জীর বিদেশ সফর সঙ্গীর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনতে কুন্ঠা বোধ করেনি। কিন্তু এই আপাত জনকল্যাণে ব্রতী হওয়ার তৃণমূলের নাটকের সারশূন্যতা প্রকাশ পাচ্ছে বর্তমান ইলেক্ট্রিসিটি বিলের বাস্তবের সাথে সঙ্গতিহীন দেয় টাকার অঙ্কে।
আমফানের ফলে পরিবার পিছু বিদ্যুতের লাইনের তদারকি তলানিতে ঠেকেছিল। জোড়াতাপ্পি দিয়ে চলছিল বিদ্যুৎ পরিষেবা। এরই মধ্যে প্রায় ৩-৪ মাস পর CESC মিটার দেখতে শুরু করেছে কিন্তু যেখানে মিটার রিডিং আলাদা মাসের আলাদাভাবে দেখার কথা, সেখানে তা একই মাসে দেখানো হচ্ছে। নিয়ম অনুযায়ী মাসে পরিবার পিছু বিদ্যুত ব্যবহার বেশি হলে ইউনিট প্রতি দাম বাড়ে, আর বিদ্যুত ব্যবহার কম থাকলে ইউনিট প্রতি দাম কমে। কিন্তু সেই ব্যবস্হাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে CESC বিলের পরিমান অত্যাধিক বৃদ্ধি করে চলেছে এবং বিলের ইউনিট প্রতি হিসাব আড়াই গুণ অতিরিক্ত ধার্য করা হচ্ছে! তিন মাসের রিডিং একমাসে দেখিয়ে, বিদ্যুত খরচ বৃদ্ধির নামে ইউনিট প্রতি দাম বাড়াচ্ছে CESC। পূর্বতন বিদ্যুত মাশুল আন্দোলনের একজন নেতা সোশ্যাল মিডিয়ায় ইতিমধ্যেই দাবী করেছে যে ৩ মাসে মোট ৭৫ ইউনিট কম দামে পাওয়ার জায়গায় মাত্র ২৫ ইউনিট উপলব্ধ হচ্ছে এই কারচুপির ফলে।
যেখানে মানুষের অন্নসংস্হান করাটাই এখন তথৈবচ অবস্থায়, সেখানে এই সংস্হার বর্তমান কারচুপিতে মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে। রাজ্য সরকারের সাথে পরোক্ষ করমর্দনের মাধ্যমেই মুনাফার চূড়ায় পৌঁছে মানুষকে বোকা বানাচ্ছে CESC। মুখে কুলুপ পাওয়ার মিনিস্টার শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের।
মমতার সাথে হাত মিলিয়ে মোদীও ইলেক্ট্রিসিটি ডাকাতিতে শামিল হয়েছে। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন ২০১৪ এবং ২০১৮-র পর আনলকের প্রারম্ভিক পর্বেই আবার ইলেক্ট্রিসিটি আইনে সংশোধনী আনার পক্ষে সওয়াল করেছে। পূর্বতন সংশোধনীগুলি ডিস্ট্রিবিউটার ও সাপ্লায়ারদের ক্ষমতায়ন ঘটিয়েছিল। এবার সরাসরি বেসরকারিকরণের পথে এগোতে চাইছে কেন্দ্র। কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল এবং গেরুয়া রাজ্য সরকারগুলি প্রাইভেট Discom প্রণয়নের সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে। সামান্য ঝড়ের সময়েই প্রাইভেট পরিষেবার নাজেহাল অবস্থা এবং বর্তমান বিল কারচুপিতে ত্রস্ত এ রাজ্যের মানুষ ইতিমধ্যেই শঙ্কিত। প্রাইভেট সংস্থার কারচুপি ঠেকাতে মানুষ সরকারী হস্তক্ষেপ দাবী করে। কিন্তু এই নয়া আইন সংশোধনী সমস্ত ক্ষমতা রাজ্যগুলির হাত থেকে কেড়ে নিয়ে কেন্দ্রের হাতে ন্যস্ত করতে উদ্যত। আর কেন্দ্র সরকারের কর্পোরেট বান্ধব মনোবৃত্তি এখন জনশ্রুতি। কর্পোরেটদের সাহায্যের জন্য কেন্দ্র ইলেক্ট্রিসিটি কন্ট্র্যাক্ট এনফোর্স্মেন্ট এজেন্সি (ECEA) প্রতিষ্ঠা করতে চলেছে! তাছাড়া এই নয়া বিল কয়লা খনির কেনাবেচাতেও পাওয়ার সাপ্লাই সংস্থাদের বিশেষ সুবিধা করে দিতে চলেছে।
লড়াইয়ের কথা এলে, বলতেই হবে যে ABECA-র আন্দোলন সবসময়েই ইস্যুভিত্তিক। বৃহৎ সমস্যাগুলি নিয়ে তাদের বক্তব্য স্পষ্ট নয়। তাছাড়া তৃণমূলের সাথে SUCI(C)-র পরোক্ষ সম্পর্কও সকলের জানা। অন্যদিকে, পূর্বতন বিদ্যুৎ মাশুল আন্দোলন ছিল CESC-র একচেটিয়ার বদলে বিভিন্ন প্রাইভেট সংস্থার অলিগোপলি বা ব্যবসায়ী সমন্বয় প্রতিষ্ঠার আন্দোলন। এই সমন্বয়গুলিতেও কিন্তু দিনের শেষে নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়ার ভিত্তিতে একই কারচুপি করার যে প্রবল সম্ভাবনা দেখা যায় তা অর্থনীতিবিদদের অজানা নয়। সরকারী হস্তক্ষেপ বৃদ্ধির দাবীকে পিছনে ঠেলে কোনো আন্দোলনই সুরাহা করতে পারবে না। সুরাহার পথ আন্দোলনই কিন্তু দাবী হোক সরকারী হস্তক্ষেপের, জাতীয়করণের, সমস্ত গ্রামীণ ও গৃহস্থদের বিদ্যুৎ পরিষেবা দেওয়ার, এক সংস্থাকে কাঠগড়ায় তুলে বাকি কর্পোরেটদের সাথে মধুচন্দ্রিমা নয়।
Comments
Post a Comment