বামফ্রন্ট এবং কর্মসংস্থানের ধাঁধাঁ

সায়ন নন্দী ও অভিজ্ঞান চক্রবর্তী  



বাম ছাত্রযুব সংগঠনগুলির ভূমিকা 

তৃণমূল জামানাতে বামফ্রন্ট ঘেঁষা বাম ছাত্রযুব সংগঠনগুলির মূল দাবী থেকেছে শিক্ষিত মধ্যবিত্তের কর্মসংস্থান। আন্দোলনের অভিমুখ হিসেবে তাই একে একে উঠে এসেছে প্রাথমিক কিংবা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে শুরু করে কলেজগুলিতে শিক্ষক নিয়োগে স্বজনপোষণ ও ব্যাপক দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই। 

সমগ্র বাম ছাত্রযুব সংগঠনগুলির আন্দোলনের সর্দথক এবং নঞর্থক দুটো দিকই রয়েছে। এই আন্দোলনগুলি একদিকে তৃণমূল সরকারের উলঙ্গ রাজনীতির উন্মোচন করেছে, তুলে ধরেছে এই সহজ সত্য যে তৃণমূল দলটির ভিত্তিপ্রস্তর হল 'লুম্পেনাইজেশন'। বামফ্রন্ট জমানার শেষ অধ্যায়ে ছাত্র রাজনীতিতে মাসলম্যানের উৎপত্তি এবং কলেজগুলিতে স্বচ্ছ নির্বাচন পদ্ধতির অবলুপ্তি শুরু হয়। সরকার পরিবর্তনের সাথে সাথেই ছাত্র রাজনীতি চারিত্রিকভাবে উগ্রতার পথে যাত্রা শুরু করে। ছাত্র নেতা বলে পরিচয় দেওয়া "দাদা"দের হাতে উঠে আসে মোটা সোনার চেন থেকে দামী বাইক। উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার পর স্নাতক স্তরে ভর্তির জন্য চাঁদার দর সারদা কেলেঙ্কারীর পরবর্তী সময়ে ধীরে ধীরে বেড়ে দাঁড়াল লক্ষাধিক টাকার দোরগোড়ায়। এই সময়ে মমতার দাপটের সঙ্গে উক্তি ছিল, কলেজের ছাত্র ইউনিয়নের কাজ সরস্বতী পূজা করা আর ফেস্ট করা, যার নেপথ্য কথা ছিল ছাত্র ইউনিয়নের ঘরটিকে নেশার ঠেকে পরিণত করা এবং অনুষ্ঠানের মঞ্চের পেছনে বিপিনবাবুর কারন সুধা...... ছাত্র ইউনিয়নের এহেন কর্মকান্ডের মুখ্য উদ্দেশ্য ছিল সমগ্র ছাত্র সমাজের বিরাজনীতিকরণ যার মাধ্যমে ধীরে ধীরে শিক্ষার বেসরকারিকরণের দিকে এগিয়ে চলা যায়। কলেজে ছাত্র ভর্তি ও শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ার মেরিট লিস্টে নামের পাশে প্রাপ্ত নম্বরের শতাংশের হিসাবও ধীরে ধীরে উধাও হয়ে গেল। ২০১৬ সালে হওয়া শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত পরীক্ষার রেজাল্ট বের হল ২০১৮ সালে, নিয়োগ তালিকা প্রকাশীত হল ২০২০ সালে এবং দেখা গেল এই প্রক্রিয়াকেই অসঙ্গতিপূর্ণ বলে হাইকোর্ট তা সম্পূর্ণ বাতিল বলে ঘোষণা করছে!!!  

বাম ছাত্রযুব আন্দোলনের এক সমালোচনামূলক দিকও আজ আলোচ্য। বাম সংগঠনগুলি শুধুমাত্র শিক্ষিত মধ্যবিত্তের চাকরীর জন্য যতটা সোচ্চার, সেই মাত্রায় নিম্নবিত্তের কর্মসংস্থানের জন্য বামপন্থীরা কেন্দ্রীয়ভাবে তেমন কোন আন্দোলন গড়ে তোলেনি। ১০০ দিনের কাজ, কন্ট্রাকচুয়ালদের স্থায়ীকরণ কিংবা রেগা প্রকল্প ভিত্তিক দাবীগুলি দাবীর লিস্টে থাকলেও তা নিয়ে বৃহৎ আন্দোলন গড়ার ইচ্ছা বিশেষ দেখা যায়নি। বামেদের আন্দোলন সীমাবদ্ধ হয়ে রয়েছে মধ্যবিত্তের স্বার্থের মধ্যে। 

বামফ্রন্টের ভূমিকা  

এবার দেখা যাক, ঐতিহাসিকভাবে কর্মসংস্থানের প্রশ্নে বামফ্রন্টের স্ট্যান্ড কী থেকেছে। ইতিহাসের পাতা উল্টে এক দশক আগে ফিরে গেলেই আমরা দেখতে পাব এই কর্মসংস্থানের প্রশ্নেই আদতে পশ্চিমবঙ্গে বাম সরকারের পতন। কর্মসংস্থানের ধুঁয়ো তুলেই বুদ্ধদেব ব্রিগেড সিঙ্গুরে টাটার কারখানা নির্মাণের পথে হেঁটেছিল। লক্ষ্য করলে দেখা যাবে, টাটা তার কারখানা প্রথমে সিঙ্গুরে এবং পরবর্তীতে গুজরাটের সানন্দের (সিঙ্গুরে কাজ আন্দোলনের ফলে আটকে পড়ায়) মত তিন ফসলি জমিতেই গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন।  কিন্তু পরবর্তীকালে দেখা গেল সানন্দের ফ্যাক্টরিতেও গাড়ির উৎপাদন এতটাই নগণ্য হল যে টাটা গোটা ন্যানো ভেঞ্চারটাকেই তুলে দিল। তবে এই দু'জায়গাতেই ব্যর্থতার পর টাটার কী মারাত্মক ক্ষতি হল? টাটা গ্রুপের বার্ষিক ব্যালেন্সশীট কিন্ত এর উল্টো কথা বলে! কেন? 

আসলে নয়াউদারবাদী অর্থনৈতিক ব্যবস্থার উৎপাদন কাঠামোটা আজ এমনই যেখানে সত্যিকারের পণ্য উৎপাদন বা রিয়েল প্রোডাকশন করে তাকে বাজারে বিক্রী করে তার থেকে পাওয়া প্রফিটের ভিত্তিতেই কেবল অর্থনীতি চলছে না বরং কারখানা নির্মাণ হওয়া এই তিন-ফসলি জমিগুলিকে অ্যাসেট হিসাবে ব্যবহার করে তাকে ফাটকা বাজারে অর্থাৎ দালাল স্ট্রিটের বিকিকিনির মধ্যে ঢুকিয়ে কর্পোরেট গোষ্ঠী বিপুল পরিমাণ অর্থ শুষে নিচ্ছে। অন্যদিকে পড়ে থাকা বাকী জমিতে রিয়েল এস্টেট বানিয়ে মুনাফার অঙ্কও তারা গুনছে। অর্থাৎ কর্পোরেটদের দু'তরফা মুনাফা কামানোর মঞ্চ এই উৎপাদন ব্যবস্থাই করে দিচ্ছে।

"শিল্প না হলে রাজ্যের ছেলেমেয়েরা চাকরি পাবে না " - এই বক্তব্যকে সামনে রেখেই তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য্য কর্মসংস্থানের এই ভুঁয়ো মডেলটাকেই সকলের সামনে দাঁড় করিয়েছিলেন। একটু বিশ্লেষণ করলেই বোঝা যাবে সিঙ্গুরে যে প্রকল্প তৈরী হওয়ার কথা ছিল তা আদতেই কিছু স্বল্প সংখ্যক মানুষকে চাকরি দিয়ে বিপুল সংখ্যক মানুষের জীবনজীবিকা সম্পূর্ণ কেড়ে নিয়ে তাদের বেকারত্বের অন্ধকারেই ঠেলে দিতে চলেছিল। অর্থাৎ কর্মসংস্থানের পরিবর্তে এই প্রকল্প বেকারত্বকেই টেনে আনতে চলেছিল। এর প্রমাণস্বরূপ একটু তথ্য ঘাটলেই বোঝা যাবে এই ন্যানোফ্যাক্টরি কখনোই একটি জুটমিল বা লেড কারখানার মত শ্রমনিবিড় শিল্প ছিল না বরং ন্যানোফ্যাক্টরি ছিল একটি অ্যাসেম্বেল ইন্ডাস্ট্রি যেখানে বাইরে থেকে আনা গাড়ির পার্টসগুলি অ্যাসেম্বেল করা হয় এবং যার অধিকাংশ কাজই হয় মেশিন দ্বারা। এই ধরণের ইন্ডাস্ট্রি আসলেই পুঁজিনিবিড়  অর্থাৎ যাতে শ্রমিক নিয়োগের প্রয়োজন কম বা কম শ্রমিক লাগিয়েই কাজ করিয়ে নেওয়া যায়, সাথে সাথে মেশিন বা কাঁচামালে বিনিয়োগ হয় অনেকগুণ বেশী। একইসাথে এই ধরণের কারখানাতে মেশিন কন্ট্রোল সংক্রান্ত প্রথাগত স্কিল অর্জিত ডিগ্রীধারী শ্রমিক নিয়োগেরই প্রাধান্য থাকে যা সাধারণত সমাজের একটি নির্দিষ্ট শ্রেণী থেকেই আসে। ফলে সিঙ্গুরের মানুষের কর্মসংস্থানের সু্যোগ যা ছিল তা বলাই বাহুল্য!


পশ্চিমবঙ্গে বেকারত্বের হার 


ধাঁধাঁর সমাধান... 

এই প্রসঙ্গেই ২০১৪ সালে 'জবরদখল' পত্রিকার একটি প্রবন্ধে ফোর্বসের একটি তথ্য তুলে এনে দেখানো হয় যে বিশ্বের প্রথম সারির পাঁচশোটি কোম্পানির বিনিয়োগ পিছু কর্মসংস্থান ক্রমশ কমতে থেকেছে এবং তাতে এও দেখানো হয়েছে গড়ে দশ কোটি টাকা বিনিয়োগ পিছু ১০ জনকেও চাকরি দেওয়া হচ্ছে না (http://jabardakhal.in/english/the-empire-of-large-capital/)। বর্তমান নয়াউদারবাদী অর্থনীতির উৎপাদন ব্যবস্থার চরিত্রটাই এমন যে বেশী দামী এবং কম টিকাউ পণ্য বারংবার তৈরী করে এই অর্থনীতি অত্যুৎপাদনের মহামারী থেকে নিজেকে বাঁচাতে চায় এবং অপরদিকে এর ফলে এই অর্থনীতি সমাজে একটি অতিরিক্ত বেতনভুক অংশকে তৈরী করে এই পণ্যের ক্রেতা হিসাবে এবং বাকীদেরকে ছুঁড়ে ফেলে দিতে যায় বেকারত্বের গভীর খাদের তলানিতে। এই পরিস্থিতিতে কর্মসংস্থানের যে মূল প্রশ্ন উঠে আসে, সিঙ্গুরের ন্যানোপ্রকল্প কি কখনো পূরণ করতে পারত? কিন্তু নিজেদের সুবিধাবাদ ও রাজনৈতিক ভ্রান্তিকে লোকাতে উদ্যত বামপন্থী সরকারের তৎকালীন শিল্পমন্ত্রী নিরূপম সেন, মার্ক্সের আদিম সঞ্চয়নের সূত্রকে উন্নত পুঁজিবাদী সঞ্চয়নের সাথে গুলিয়ে দিতে শুরু করেন। সোভিয়েত যুক্তরাষ্ট্রে কমঃ লেনিনের 'নিউ ইকোনমিক পলিসি' (নেপ) চালু করার কথা তুলে মিশ্র অর্থনীতির গুণগান গাওয়া শুরু হল। কিন্তু নিরূপমবাবুরা মার্ক্স-লেনিনের সেই নীতিকে অপব্যাখ্যা করেও আসলে নিজেদের আধুনিক চিনা পার্টির ন্যায় কর্পোরেটবান্ধব স্ট্যান্ডকে লোকাতে পারেননি। আসলে প্রবর্তিত নয়াউদারবাদী অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে, বুর্জোয়া গণতন্ত্রের মধ্যে নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতেই বামফ্রন্ট কর্পোরেটদের সাথে হাত মেলাল। এই বামফ্রন্ট সরকার কোনো বৈপ্লবিক পথে ক্ষমতায় আসেনি বরং এসেছিল নিবার্চনী পথে, কিন্তু বুর্জোয়া গণতন্ত্রের অভ্যন্তরে সীমিত ক্ষমতা নিয়ে থাকা বামফ্রন্ট সরকার ভেনেজুয়েলার ন্যায় একটি বিকল্প বৈপ্লবিক কর্মসূচী রাখার কঠিন পদক্ষেপটি গ্রহণ না করে নয়াউদারবাদকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরল। এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবার বিপ্লবী পথটাকে এড়িয়েই যাওয়া হল কারণ কমিউনিস্ট পার্টি তাদের বিপ্লবী লাইনটাকে খারিজ করেছে দীর্ঘকাল আগেই, সেই ৭০-এর দশকেই তৎকালীন পার্টি সম্পাদক কমঃ পি. সুন্দরাইয়ার ১২০ পাতার পদত্যাগপত্র থেকেই যা স্পষ্ট।

শিল্প বাড়ালেই চাকরি আসার এই মিথটাকে ভেঙে কর্মসংস্থানকে মৌলিক অধিকারের দাবীতে ২০২০ সালের মার্চ মাসে মহাবোধি সোসাইটিতে একটি কনভেনশন করেন বিভিন্ন গণআন্দোলনের সাথীরা, যদিও করোনা মহামারী এবং পরবর্তীতে আসন্ন নির্বাচনী মেরুকরণের প্রেক্ষাপটে সেই আন্দোলন আর এগোয়নি। পিপল'স ব্রিগেড দীর্ঘদিন ধরে 'বিনিয়োগ পিছু চাকরি আইন' চালু করার দাবী জানিয়ে আসছে, বলা হচ্ছে ১০ কোটি টাকা বিনিয়োগ পিছু ন্যুনতম ১০০ জনকে চাকরি দিতে হবে। 

বর্তমান পরিস্থিতি 

কর্মসংস্থানের প্রশ্নে বামপন্থী ছাত্র-যুব সংগঠনগুলির সীমাবদ্ধতা আগেই বলা হয়েছে এবং এর সাথে সাথেই সিঙ্গুরের প্রসঙ্গে বামফ্রন্ট নিজের ভুল কখনোই স্বীকার করেনি। বামপন্থী ছাত্র-যুব সংগঠনগুলিও এই প্রসঙ্গে পার্টিকে ভুল স্বীকার করতে চাপ দেয়নি বরং গণসংগঠনের নিজের স্বতন্ত্রতা হারিয়ে পার্টির লাইনকেই সম্পূর্ণ মেনে চলেছে এবং পার্টির অন্যায়ের স্বপক্ষেই চেঁচামেচি করে এসেছে। তাই আজকে তারা যখন বলছে "সিঙ্গুরেই ফ্যাক্টরি করব" তখন সেটা যে প্রকৃতপক্ষে নয়াউদারবাদী শোষণেরই খেলা তা আরো স্পষ্ট হয় বিজেপির নেত্রী লকেট চ্যাটার্জীর এই স্লোগান ব্যবহার করার মধ্যে দিয়ে। এই অপরিবর্তিত স্লোগান হাইজ্যাকিং আসলে স্পষ্ট করে এতে অর্থনৈতিক গন্ডগোল আছে যা আদতেই কর্পোরেটদের স্বার্থেরই অনুকূল। 

পার্টির এই ভ্রান্তিগুলিকে উপেক্ষা করা এবং এর লাগাতার সমর্থন করে যাওয়াই ছাত্র-যুব সংগঠনগুলির পিছিয়ে পড়া ও ক্ষয়ের একটি প্রধান কারণ। এছাড়াও বর্তমানে দেখা গেছে, স্কুলগত ইস্যুগুলি এমনকী 'নিউ এডুকেশান পলিসি'-এর মত গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতেও এই ছাত্র আন্দোলন সেভাবে অ্যাড্রেসই করতে পারেনি। ফলে আজকের ফ্যাসিবাদী পরিস্থিতিতে পার্লামেন্টীয় পার্টিগুলির পতন এবং সামাজিকভাবে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়ার রূপরেখা স্পষ্ট। মাথায় রাখতে হবে, কর্মসংস্থানের প্রশ্নে যে দীর্ঘ ইতিহাস বামফ্রন্টের রয়েছে এবং যে বিষয়ে বাম ছাত্র-যুব সংগঠনগুলি বরাবর আপোষ করে এসেছে তার ফলে তাদের আজকের আন্দোলন, মিছিল, বক্তব্য আসলে জনমানসে তেমন প্রভাব ফেলছে না।

জাতীয় যুব বেকারত্ব হার


গোটা দেশে রিজেক্টেড এবং ভারতে নয়াউদারবাদের জনক কংগ্রেসের সাথে জোটে আসা (যে জোট ২০১৬ সালে মুখ থুবড়ে পড়েছে এবং ২০১৯শে বামফ্রন্টকে ৭%-এ নামিয়ে এনেছে) বামফ্রন্টের সুবিধাবাদের নির্লজ্জ বহিঃপ্রকাশ। বর্তমানে কর্পোরেটবান্ধব অ্যাজেন্ডা নিয়ে চলা বামফ্রন্টের কংগ্রেসের সাথে জোটবদ্ধতা থেকে বেড়িয়ে আসা এক অলীক কল্পণা। অন্যদিকে, তৃণমূলপন্থী কিছু নকশাল সংগঠন বিজেপিকে রুখতে তৃণমূলকে সামনে দাঁড় করিয়ে নির্লজ্জ প্রচারে নেমেছে এবং তৃণমূলের বিরুদ্ধে সবরকমের লড়াইকে এড়িয়ে যেতে চাইছে। এই সংগঠনগুলি আদতে সিঙ্গুর আন্দোলনের সময় থেকেই তৃণমূলের ছত্রছায়াতেই কাজ করে এসেছে এবং আজকে দাঁড়িয়ে এদের বুক চিতিয়ে তৃণমূলী কীর্তন গাওয়া আসলে এদের রাজনীতির অন্তঃসারশূন্যতার প্রকাশ মাত্র। আজকে এমন এক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে যেখানে বামফ্রন্টের সংগঠনকে ব্যবহার করে কংগ্রেস কিছু ভোট কামিয়ে নেবে আর বামফ্রন্টের রইবে শূন্যঝোলাই (যা আগের দুবারের ইলেকশনেও হয়েছে) এবং নকশালরা নিজেদের সমস্ত শক্তি দিয়ে ভোটে না লড়ে তাদের আন্দোলনের ফল তৃণমূলকে ছেড়ে দেবে ও অন্যদিকে তারা যেটুকু যা আন্দোলন করেছিল তার সুফলও কতটা ধরে রাখতে পারবে তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে।

এমতবস্থায় এই দুই সুবিধাবাদী জোটকেই বর্জন করে প্রয়োজন কর্মসংস্থানের প্রশ্নে একটি বিকল্প বাম আন্দোলনের উন্মেষ। তবেই কেন্দ্রীয়ভাবে রাজ্যের রাজনীতিতে বামশক্তির বিকাশ হবে এবং ফ্যাসীবাদের বিরুদ্ধে আন্দোলনের পথ আরো প্রশস্ত হবে। 

Comments

Popular posts from this blog

ফ্যাসিবাদের উত্থানের যুগে সুবিধাবাদের রমরমা

ঘটনার বিবরণ নয়, উপলব্ধি জরুরী; প্রসঙ্গ আর.জি.কর

কর্পোরেট হাঙরদের হাত থেকে লাদাখকে বাঁচাও!