বর্তমান সরকার ও আশু কর্তব্য

প্রমোদ দাশগুপ্ত


[কমঃ প্রমোদ দাশগুপ্ত-র ১১২তম জন্মদিবসে তাত্ত্বিক চর্চার উদ্দেশ্যে পুনঃপ্রকাশিত হল। এই প্রবন্ধে উঠে এসেছে পশ্চিমবঙ্গে বামফ্রন্ট সরকার প্রতিষ্ঠার প্রেক্ষাপট এবং নতুন সরকারের অভিমুখ। একই সাথে সেই সময়ে কেন্দ্রে কংগ্রেস বিরোধী জনতা পার্টির নেতৃত্বাধীন সরকার সম্পর্কেও সিপিআই(এম) পার্টি নেতৃত্বের একাংশের মনোভাব ফুটে উঠেছে। উল্লেখ্য, এই জনতা পার্টির মধ্যে উগ্র হিন্দুত্বের রাজনীতির ভ্রূণ সুপ্ত থাকার হদিশ পাওয়া সত্ত্বেও পার্টি নেতৃত্বের জোট গঠনে ব্যাকুলতার বিরোধিতা করেছিলেন নবগঠিত পার্টির প্রথম সাধারণ সম্পাদক কমঃ পি. সুন্দরাইয়া। বর্তমান পরিস্থিতিতে উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের একক সংখ্যাগরিষ্ঠ সরকার গঠন এবং পশ্চিমবঙ্গে বৃহৎ পুঁজি বান্ধব প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে গিয়ে ২০১১-য় বামফ্রন্টের পতন, তাত্ত্বিক বিতর্কের উৎসেচক হিসেবে এই প্রবন্ধের প্রাসঙ্গিকতা বাড়িয়ে তুলেছে।]

ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী) পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিধানসভার নির্বাচনে যে কৌশল অবলম্বন করেছিলো পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটি সেই কৌশলকে সঠিক বলে অভিহিত করেছে। এই সঠিক কৌশলের জন্যই রাজ্য বিধানসভার নির্বাচনে বামপন্থী ফ্রন্ট এবং সিপিআই(এম) বিরাট সাফল্য অর্জন করেছে। এই সাফল্যকে পাথেয় করে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। একথা এক মুহূর্তের জন্যও ভুললে চলবে না যে এই সরকার জনগণের সরকার। তাই সরকারের সঙ্গে জনগণের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ সুদৃঢ় করতে হবে।

ঐক্যের প্রয়োজন কেন?

আমরা লোকসভা নির্বাচনে জনতা পার্টির সঙ্গে নির্বাচনী সমঝোতা করেছিলাম। তার পূর্বে আমরা ইন্দিরা গান্ধীর স্বৈরতান্ত্রিক শাসন প্রতিষ্ঠার প্রয়াসের বিরুদ্ধে বিভিন্ন পর্যায়ে একত্রে আন্দোলন করি। তখন দুটি প্রবণতা দেখা দিয়েছিল। অনেকে মনে করতেন ইন্দিরা সরকারের বিরুদ্ধে জনসংঘর্ষ সমিতির সঙ্গে সামগ্রিক ঐক্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আবার অনেকে মনে করতেন কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে জনসংঘর্ষ সমিতির কোনরূপ ঐক্যবদ্ধ কার্যক্রম হতে পারে না। আমরা এই দুই ধারণাকেই ভ্রান্ত বলে মনে করি। এই জনসংঘর্ষ সমিতির সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ কার্যক্রমকে গণতন্ত্র ও ব্যাক্তি স্বাধীনতার আন্দোলনে সীমিত রাখি। সঙ্গে সঙ্গে আমরা বাম ও গণতান্ত্রিক ঐক্যের নীতিতে অবিচল থাকি। এই রণকৌশলের ভিত্তিতেই আমরা জনতা পার্টির সঙ্গে নির্বাচনী সমঝোতা করি এবং লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল প্রমাণ করে যে, আমাদের রণকৌশল ছিলো সঠিক।

রাজ্য বিধানসভার নির্বাচনে আমাদের প্রস্তাব কেবলমাত্র আসন ভাগাভাগির মধ্যেই সীমিত থাকে না। আমরা জনতা পার্টির সঙ্গে একটা ন্যূনতম কর্মসূচীর ভিত্তিতে সরকার গঠনেরও প্রস্তাব দিই। লোকসভা নির্বাচনের সময়েই আমরা বলেছি, জনতা পার্টির সঙ্গে আমাদের সামাজিক অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে মতপার্থক্য রয়েছে। এখন প্রশ্ন উঠতে পারে সামাজিক-অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে মতপার্থক্য থাকা সত্ত্বেও কর্মসূচীর ভিত্তিতে ঐক্য প্রতিষ্ঠা হতে পারে কিনা? প্রশ্ন উঠতে পারে জনতা পার্টির সঙ্গে মিলিত সরকার গঠন করা যায় কিনা?

এই প্রশ্নের জবাব আমরা তখনই দিতে পারব যখন আমরা পরিস্থিতির সঠিক মূল্যায়ন করতে পারব। ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী)-র দৃঢ় অভিমত হলো, গণতন্ত্র ও ব্যক্তিস্বাধীনতার প্রশ্নটাই আজকের দিনের জরুরী এবং প্রধান প্রশ্ন। কেন্দ্রীয় কমিটি এই প্রশ্নের উপরই বেশি গুরুত্ব আরোপ করেছে। কেন্দ্রীয় কমিটি মনে করে যে, সারা ভারতের বিপুল সংখ্যক মানুষকে গণতন্ত্রের পক্ষে সমবেত করার গুরুত্ব আজও রয়েছে। কেননা স্বৈরতন্ত্রের বিপদ এখনো কাটেনি। আর এই কাজে পশ্চিমবাংলার জনগণের একটা বিশেষ দায়িত্ব রয়েছে, যেহেতু এ রাজ্যে বাম ও গণতান্ত্রিক শক্তি বেশ জোরদার। ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী) মনে করে, সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টি করার জন্য কতকগুলি কাজ অবিলম্বে করা প্রয়োজন। যেমন আজও মিসা প্রত্যাহৃত হয়নি। মিসা প্রত্যাহৃত না হলে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের বিরুদ্ধে তা প্রয়োগ হবার আশঙ্কা সব সময় থেকে যায়। আজও প্রেস অ্যাক্ট প্রত্যাহৃত হয়নি! ৪২তম সংশোধন, রাজাগুলির হাতে বেশি ক্ষমতা প্রদান, আনুপাতিক হারে নির্বাচন, জনপ্রতিনিধিদের ফিরিয়ে নেওয়া (রাইট টু রিকল), জরুরী অবস্থা জারির জন্য রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার বিলোপ ইত্যাদি বিষয়গুলির উপর আমাদের জোর দিতে হবে। এই সবের জন্য সংবিধান সংশোধনের প্রয়োজন রয়েছে। আর এই সমস্ত প্রশ্নে জনতা পাটির সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ কার্যক্রম অবশ্যই চালিয়ে যেতে হবে।

একথা আমরা যেন ভুলে না যাই যে, আজ যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে তা সহজে হয়নি। এজন্য মহান জনগণকে দীর্ঘ এবং কঠোর সংগ্রাম পরিচালনা করতে হয়েছে। অভ্যন্তরীণ জরুরী অবস্থার দিনগুলিতে সারা ভারতে যে বিভীষিকাময় পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় এরাজ্যে সেই পরিস্থিতি ১৯৭২ সালের নির্বাচনের পর থেকেই চলতে থাকে। কিন্তু তাতে হতাশার কোন অবকাশ ছিল না। ১৯৭২ সালের নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপি এবং সন্ত্রাস সৃষ্টির পরও আমরা মাদুরাই কংগ্রেসে বলেছিলাম, এই মারাত্মক পরিস্থিতির বিরুদ্ধে আমাদের সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে এবং সেই সংগ্রামের বিজয় অনিবার্য। তখন থেকেই পার্টি গণতন্ত্র ও ব্যক্তিস্বাধীনতা পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য ঐক্যবদ্ধ সংগ্রাম চালিয়ে যায়। গণতন্ত্র হত্যাকারী ঘৃণিত কংগ্রেসের বিরুদ্ধে জনগণের মধ্যে একটা ঐক্যের মনোভাব সৃষ্টি হয়। আমরা জনগণের এই মানসিকতার পূর্ণ মর্যাদা দিয়েই রাজ্য বিধানসভার নির্বাচনের প্রাক্কালে জনতা পার্টির সঙ্গে ঐক্য প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দিই। কিন্তু জনতা পার্টির নেতারা ভ্রান্ত বিশ্লেষণের ভিত্তিতে এই ঐক্যের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। ফলে নির্বাচনী সংগ্রাম হয় ঐক্যের শক্তি বনাম অনৈক্যের শক্তির মধ্যে। নির্বাচনে ঐক্যের শক্তিই জয়যুক্ত হয়। জনগণ ঐক্যের শক্তির পক্ষে যে রায় দিয়েছেন তার মর্যাদা আমাদের দিতেই হবে।

যুক্তফ্রন্ট ও বামফ্রন্ট

জনগণের রায়ে পশ্চিমবঙ্গে বামপন্থী ফ্রন্ট সরকার গঠিত হয়েছে। এই সরকারের সঙ্গে পূবর্তন দুটি যুক্তফ্রন্ট সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য রয়েছে। ১৯৬৭ এবং ১৯৬৯ সালে পশ্চিমবাংলায় যে যুক্তফ্রন্ট সরকার গঠিত হয়েছিল সেই সরকারের মধ্যে বৃহৎ-ভূস্বামী এবং পুঁজিপতিদের প্রতিনিধিত্বকারী দল ছিল। যেমন বাংলা কংগ্রেস। আবার ঐ সময়কারের মধ্যে যে সমস্ত দল ছিলো তাদের মধ্যে বিভেদের শক্তি ছিল – যেমন দক্ষিণপন্থী কমিউনিস্ট পার্টি, এসইউসি। বর্তমানে রাজ্যে যে বামপন্থী ফ্রন্ট সরকার গঠিত হয়েছে তাতে বৃহৎ-ভূস্বামী, পুঁজিপতিদের কোন প্রতিনিধি নেই। আবার বামপন্থী ফ্রন্টের অন্তর্ভুক্তদলগুলি দীর্ঘ সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে।

যুক্তফ্রন্ট সরকার গঠিত হবার পর আমরা সঠিকভাবেই সেই সরকারকে সংগ্রামের হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করার স্লোগান দিই। আমরা একথাও জানতাম শ্রেণী-সংগ্রাম তীব্র হলেই বৃহৎ-ভূস্বামী একচেটিয়া পুঁজিপতিরা আতঙ্কিত হয়ে উঠবে। তারা সরকারের পতন ঘটাবে। তাই কেরালায় কংগ্রেস মাত্র নয়টি আসন পাওয়া সত্ত্বেও আমরা ১৯৬৭ সালের এপ্রিল মাসে পার্টির “নতুন পরিস্থিতি ও আমাদের কর্তব্য” দলিলে পরিষ্কার বলেছিলাম যে, ঐ সরকার পাঁচ বছর টিকবে না। শ্রেণী-সংগ্রাম জোরদার হলে শ্রমজীবী জনগণের সঙ্গে বৃহৎ-ভূস্বামী, একচেটিয়া পুঁজিপতিদের মধ্যেই সেই সংঘাত চলতে থাকে। তাই তাদের প্রতিনিধিরা আর সেই সরকারকে সংগ্রামের হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহৃত হতে দিতে পারে না।

দ্বিতীয়ত কেন্দ্রের তদানীন্তন কংগ্রেস সরকারের মনোভাব সম্পর্কেও আমাদের কোন মোহ ছিল না। ১৯৬৭ সালে সারা ভারতের মোট ৮টি রাজ্যে কংগ্রেস বিরোধী সরকার গঠিত হয়। কিন্তু এই ৮টি রাজ্যের মধ্যে একটি রাজ্যেও কংগ্রেস-বিরোধী সরকার পাঁচ বছর ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারেনি। এর কারণ হলো রাজ্যে রাজ্যে কংগ্রেস পরাস্ত হলেও যেহেতু কেন্দ্রের ক্ষমতায় কংগ্রেস ছিল এবং রাজ্যে রাজ্যে কংগ্রেসের সাংগঠনিক শক্তি বেশি ছিল তাই সেই সরকারের পতন ঘটানো কঠিন ছিল না। বর্তমানে সেই পরিস্থিতি নেই। কেননা যদিও কংগ্রেসই বর্তমানে দেশের প্রধান শক্তি এবং তার প্রভাব প্রতিপত্তি তথাপি কংগ্রেসের আর পূর্বেকার সেই সাংগঠনিক ক্ষমতা নেই। তাছাড়া জনতা পার্টি এখনও সংগঠিত রূপ নেয়নি। এই দল হলো বিভিন্ন দলের সমন্বয়। ইতিমধ্যেই এই দলের মধ্যে নানারকমের মতবিরোধ দেখা দিয়েছে। কেন্দ্রে জনতা পাটির সরকার গঠিত হলেও বেশ কয়েকটি রাজ্যে অন্য দল বা মোর্চা সরকার গঠন করেছে। যেমন কাশ্মীরে গঠিত হয়েছে ন্যাশনাল কনফারেন্সের সরকার; পাঞ্জাবের সরকারে আকালি দলের প্রাধান্য রয়েছে; তামিলনাড়ুতে গঠিত হয়েছে নিখিল ভারত আন্না ডিএমকে-র সরকার।

আজ যখন বৃহৎ-ভূস্বামী এবং একচেটিয়া পুঁজিপতিদের প্রতিনিধিত্বকারী দলগুলি দ্বিধাবিভক্ত তখন নিঃসন্দেহে সেই পরিস্থিতি হচ্ছে বাম ও গণতান্ত্রিক শক্তির অনুকূলে। এই বাস্তব পরিস্থিতির ভিত্তিতেই বামপন্থী ফ্রন্ট সরকারের রণকৌশল নির্ধারণ করতে হবে। বাম ও গণতান্ত্রিক ঐক্যের ভিত্তি হলো সাম্রাজ্যবাদ-বিরোধী, সামন্তবাদ-বিরোধী এবং একচেটিয়া পুঁজি-বিরোধী আন্দোলন। এই আন্দোলন অব্যাহত রাখতে হবে। আর বামফ্রন্ট সরকার হবে সংগ্রামের সহায়ক শক্তি। কিন্তু একথা ভুললে চলবে না যে, এই  সরকার হলো জনগণের সরকার — আমাদের সরকার। তাই সরকারকে রক্ষা করার দায়িত্ব জনগণের। এই সরকারকে সামনে রেখে এমন একটা নজির সৃষ্টি করতে হবে যার প্রভাব সারা ভারতে পড়ে। সারা ভারতের বাম ও গণতান্ত্রিক শক্তিকে সংগঠিত হবার অনুপ্রেরণা সৃষ্টি করতে হবে পশ্চিমবাংলার বামপন্থী ফ্রন্ট সরকারকে। গরিব মধ্যবিত্তদের দুঃসহ জীবন যন্ত্রণাথেকে রেহাই দেবার জন্য কিছু কিছু অর্থনৈতিক কার্যক্রম অবশ্যই নিতে হবে। ইতিমধ্যেই সরকার এ সম্পর্কে কয়েকটি ঘোষণা করেছে। কিন্তু যে বিষয়ের উপর আমাদের জোর দিতে হবে তা হলো গণতান্ত্রিক  দাবির কার্যক্রমের উপর। কেননা এই ইস্যুতেই আমরা ব্যাপকতম জনগণকে ঐক্যবদ্ধ   করতে পারব। ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকার সমস্ত রাজনৈতিক বন্দীকে মুক্তি দেবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এমনকি আমাদের কর্মীদের যারা খুন করেছে তাদেরও মুক্তি দেওয়া হচ্ছে। এতে অনেকের মনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, আবার খুন-জখম শুরু হবে না তো?  আমাদের বক্তব্য হলো, কাউকে জেলে পুরে তার রাজনৈতিক মতবাদ বিনষ্ট করা যায় না। কংগ্রেস দল নিজেদের দলীয় স্বার্থেই হাজার হাজার যুবককে নিয়ে খুনে বাহিনী গঠন করেছে। তাদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক সংগ্রাম চালাতে হবে। যারাই সমাজ জীবনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চাইবে জনগণ থেকে তাদের বিচ্ছিন্ন করতে হবে। আমাদের এমন কৌশল অবলম্বন করতে হবে যাতে করে একদিকে এই  সরকারের স্থায়িত্বের গ্যারান্টি সৃষ্টি হয় এবং সঙ্গে সঙ্গে এই সরকারের পাশে বিপুল সংখ্যক জনগণের সমাবেশ ঘটে।     

সংগ্রামের রণকৌশল সম্পর্কেও আমাদের সজাগ থাকতে হবে। যেমন ধর্মঘট হলো শ্রমিকশ্রেণীর সংগ্রামের সর্বশ্রেষ্ঠ হাতিয়ার। এই অধিকারকে চোখের মণির মত রক্ষা করব। কিন্তু এই অধিকার একচেটিয়া সংগ্রামের সর্বশ্রেষ্ঠ হাতিয়ার। কিন্তু এই অধিকার আমরা কখন এবং কিভাবে প্রয়োগ করব? পুঁজিপতি গোষ্ঠী চাইবে জনগণ থেকে সরকার বিচ্ছিন্ন করতে। আমরা তখনই ধর্মঘটের অধিকার প্রয়োগ করব যখন কোন ইস্যুতে সরকার এবং জনগণের মধ্যে ঐকমত্য হয়েছে, কিন্তু পুঁজিপতিরা তাতে বাধা দিচ্ছে। বৃহৎ ভূস্বামী, একচেটিয়া পুঁজিপতিদের বিচ্ছিন্ন করার কৌশল নিয়েই আমাদের রণকৌশল নির্ধারণ করতে হবে।

[পশ্চিমবঙ্গে বামফ্রন্ট ও বামফ্রন্ট সরকার গড়ার অন্যতম কারিগর, বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান এবং সিপিআই(এম)-র রাজ্য সম্পাদক প্রয়াত কমরেড প্রমোদ দাশগুপ্ত ১৯৭৭ সালের ১৮ই জুলাই এই ভাষণটি দিয়েছিলেন। ভাষণটির লিখিত রূপ তাঁর মৃত্যুশতবর্ষে প্রকাশিত ‘নির্বাচিত রচনা সংকলন’ থেকে ২০১১-য় ‘বামফ্রন্ট সরকার: মানুষই শেষ কথা’ বইতে অন্তর্ভুক্ত হয়।]

Comments

Popular posts from this blog

ফ্যাসিবাদের উত্থানের যুগে সুবিধাবাদের রমরমা

কমিউনিস্ট পার্টি ও তেলেঙ্গানা আন্দোলনের মহিলা কর্মীরা : কমঃ শর্মিষ্ঠা চৌধুরীর কলমে

কেন্দ্র সরকারের ‘জাতীয় শিক্ষা নীতি’ – একটি শিক্ষা বিরোধী ইস্তেহার