মণিপুর: পাহাড় ও উপত্যকার বিরোধ - তৃতীয় দ্বন্দ্বের খোঁজ!

অধীর রায়


ঔরঙ্গজেবের পুত্র প্রথম বাহাদুর শাহ তখন দিল্লির মসনদে। সময়টা ১৭১০। অন্যদিকে, বার্মায় আরাকানদের আধিপত্য। মোগলদের সঙ্গে পেরে না উঠলেও তাদের প্রতাপ কিছু কম নয়। মোগল ভারত আর বার্মার মধ্যখানে পাহাড় ঘেরা ছোট্ট এক দেশ, স্থানীয় ভাষায় যার নাম কাংলইপাক বা মেইতেই। মেইতেইরা ছিলেন সানামাহি ধর্মাবলম্বী। প্রাচীনকালে মণিপুরি বেশিরভাগ মানুষ বিশ্বাস করতেন পূর্বপুরুষ ও প্রকৃতির আরাধনায়। এই ধর্মবিশ্বাসকে পরবর্তীকালে নৃতত্ববিদরা এই ধর্মের একজন মূল দেবতার নাম অনুসরণ করে নাম দিয়েছেন ‘সানামাহি’। সানামাহি ধর্মের একটি মূল বৈশিষ্ট্য হল সমস্ত প্রকৃতির মধ্যে নিহিত জীবনে বিশ্বাস। মূর্তিপূজার কোন চল একেবারেই নেই, কোনকালেই ছিল না। পূর্বপুরুষের উপাসক এই ধর্মের সঙ্গে প্রাচীন চৈনিক ধর্মের মিল আছে। আঠারো শতকে কাংলইপাকের ব্রাহ্মণ্যবাদী রাজা পেমহেইবা (১৬৯০-১৭৫১) এবং ভাগ্যচন্দ্র (১৭৬৩-১৭৯৮) মেইতেই সংস্কৃতি ধ্বংসের অভিযানে নামেন। রাজশক্তিকে ব্যবহার করে জবরদস্তি ব্রাহ্মণ্যবাদী ধর্মীয় সংস্কৃতি চাপিয়ে দিতে চেষ্টা করেন। ব্রাহ্মণ্যবাদী ধর্মের দেব-দেবীর আরাধনা বাধ্যতামূলক করেন। মেইতেইদের বৈষ্ণবীকরণ এই সময় থেকে শুরু হয়। জোটবদ্ধ করার উদ্দেশ্যে এক ধর্ম, এক ভাষা ও এক লিপিতে একত্রিত করতে শ্রীহট্ট বা সিলেটের ব্রাহ্মণ শান্তিদাস অধিকারির কাছে রাজা পেমহইবা গৌড়ীয় বৈষ্ণব ধর্মে দীক্ষা নেন। এবং মেইতেই রাজা পরম্পরাগত ধর্মকে (যাকে আজ “সানামাহি” ধর্ম বলা হয়) বর্জন করে জনতাকে বাধ্য করলেন বৈষ্ণব ধর্ম মেনে নিতে। পেমহইবা গৌড়ীয় বৈষ্ণব ধর্মকে রাষ্ট্রধর্ম ঘোষণা করলেও মোগলদের অনুগ্রহ পেতে তিনি গ্রহণ করেছিলেন ফারসি উপাধি 'গরিব নিয়াজ'। কথিত আছে, প্রাচীন সানামাহি ধর্মের যাবতীয় স্মৃতি মুছে ফেলতে জ্বালিয়ে দেওয়া হয় অসংখ্য প্রাচীন মেইতেই লিপির পুঁথি।(১) 

ধর্মের অঙ্গ হিসেবে মেইতেইদের উপর চাপিয়ে দেওয়া হয় বাংলা লিপি। লোকের মুখে মেইতেই ভাষা বেঁচে থাকলেও ব্যবহারের অভাবে এক সময় হারিয়ে যায় লিপিটি। বর্তমানে এর পুনরুদ্ধারের জন্য আন্দোলন চলছে। মেইতেই পুরাণ ও লোকগাথাকে মুছে ফেলে বাংলা লিপিতে নতুনভাবে ব্রাহ্মণ্যবাদী ধর্মীয় ভাবধারায় লেখা হয় তাদের ইতিহাস। দেশের নাম কাংলইপাক বা মেইতেই পাল্টে করা হয় মণিপুর। গৌড়ীয় বৈষ্ণব ধর্মের প্রভাবে বেশি করে আমদানি হয় বাংলা ও সংস্কৃত শব্দের। পেমহইবার পৃষ্ঠপোষকতায় শান্তিদাস গোসাঁই রচনা করেন বিজয় পাঁচালি গ্রন্থ। এই বইয়ে তিনি দাবি করেন, ভারতের উত্তর-পূর্বের এই মণিপুরই মহাভারতে বর্ণিত কাহিনী, যেখানে অর্জুন বনবাসকালে মণিপুরের রাজা চন্দ্রভানুর কন্যা চিত্রাঙ্গদার রূপে মুগ্ধ হয়ে তাঁকে বিয়ে করেন। অর্জুনের সঙ্গে ক্ষত্রিয় যোদ্ধা যারা মণিপুর গিয়েছিলেন, তাদের অনেকে মণিপুরি রূপসী কন্যাদের বিয়ে করে সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে থাকেন। অর্জুন ও চিত্রাঙ্গদার একমাত্র ঔরসজাত সন্তান বভ্রুবাহন মণিপুরের সিংহাসনের অধিপতি হন। মণিপুরে তখন থেকে আর্য-ক্ষত্রিয়দের শাসন শুরু হয়। শান্তিদাস গোসাঁইয়ের মতে সেই বভ্রুবাহনই মেইতেই রাজাদের আদি পুরুষ। আঠারো শতকে তৈরি হওয়া এই ‘মিথ’-এর উপর নির্ভর করে উনিশ শতকে রবীন্দ্রনাথ লেখেন নৃত্যনাট্য চিত্রাঙ্গদা। ‘বিজয় চরিত’-এর মূল উদ্দেশ্য ছিল মণিপুরে ব্রাহ্মণ্যবাদ প্রতিষ্ঠা, আর্যাবর্তের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে তাকে যুক্ত করা। অর্জুনের বংশধর ক্ষত্রিয় বংশী এবং বিষ্ণুর উপাসক বলে তাদেরকে বিষ্ণুপ্রিয়া বলা হয়। মেইতেই ও বিষ্ণুপ্রিয়া ভাষাগোষ্ঠীর মধ্যে বহুদিন ধরে দ্বন্দ্ব রয়েছে। মেইতেইরা বিষ্ণুপ্রিয়াদের বলত ‘মায়াং’ বা বহিরাগত। (২) 

কাংলইপাকে তখন রাজতন্ত্র চালু ছিল। পীতাম্বর চারাইরঙবা ছিলেন দেশের প্রথম রাজা। ১৮২৪ সাল থেকে এটি ব্রিটিশ ভারতের অন্তর্ভুক্ত একটি দেশীয় রাজ্য হিসাবে ছিল। ১৮৯১ সালে লর্ড ল্যান্সডাউনের সময় রাজা কুলচন্দ্র সিং-এর সাথে ব্রিটিশদের বিরোধ বাধে। এক বছরের মধ্যে তিনি অপসারিত হন। তার নাবালক পুত্র চূড়াচন্দ্র সিং ক্ষমতায় আসেন। বোধচন্দ্র সিং এই বংশের শেষ রাজা ছিলেন।

১৯৪৭-এর পরে দু বছর ধরে মণিপুরকে একটি স্বতন্ত্র রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা চলতে থাকে। একটি স্বাধীন বিধানসভা এবং নিজস্ব সংবিধানও এই সময়ে মণিপুরে কার্যকরী থাকে। মণিপুর বার্মা এবং চীনের মধ্যবর্তী অবস্থানকারী একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য। ভারত সরকারের প্রথম স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল ১৯৪৯ সালে মহারাজা বোধচন্দ্রকে শিলঙে ডেকে পাঠান এবং রাজাকে তার নিজেরই বাড়িতে গৃহবন্দী করে রেখে সই করতে বাধ্য করেন এক ‘মার্জার’ দলিলে, যাকে অনেকে সংযুক্তির দস্তাবেজ বলে  উল্লেখ করেছেন। এই সমস্ত ঘটনাবলী জন প্যারাটের বইতে বিস্তারিতভাবে বর্ণিত আছে। এই রাজনৈতিক আত্মসাৎ সুষ্ঠুভাবে ঘটে যাওয়ার পর রাজা এবং মণিপুরের সাধারণ মানুষজনকে না জানিয়েই এই দলিলের নানা অনুবিধি পালটে ফেলা হয়। এর বিরুদ্ধে যাতে কোন বিদ্রোহ না ঘটে তা নিশ্চিত করতে ভারতীয় সেনার একটি বড়সড় বাহিনী এখানে নিযুক্ত করা হয়। রাস্তা-ঘাটে বাজারে সর্বত্র সেনা মোতায়েন করা হয়। আজও মণিপুরে বিপুল পরিমাণে সেনা মোতায়েন করা আছে। জন প্যারাটের মতে বাধ্যতামূলক হস্তান্তরের অনুষ্ঠানটি ঘটে ১৫ অক্টোবর, ১৯৪৯ ইম্ফলের বিখ্যাত রাজকীয় পোলো ক্রীড়াঙ্গনে। মেজর-জেনারেল রাওয়াল সিং মণিপুরের চিফ কমিশনার নিযুক্ত হন এবং অবিলম্বে সমস্ত মন্ত্রীসভা ও বিধানসভা অবৈধ ঘোষণা করে তার সমস্ত ক্ষমতা নিজের হাতে তুলে নেন।(৩) এরপর যা ঘটে তার নেতিবাচক ফল মণিপুরের সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ভবিষ্যতের ক্ষেত্রে সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলে। ভারতীয় মানুষজনের মণিপুরে অভিবাসনের উপর কোন সরকারি বা আইনি নিয়ন্ত্রণ না থাকায় মণিপুরের ব্যবসা-বাণিজ্য আরও বেশি করে চলে যেতে থাকে মাড়ওয়ারি ব্যবসায়ীদের  হাতে। উপরন্তু প্রায় সমস্ত সরকারি ও প্রশাসনিক চাকরি পেতে থাকেন মণিপুরের বাইরে থেকে আসা ভারতীয়রা যদিও সেইসব চাকরির জন্য যোগ্য মণিপুরীদের কোন অভাব ছিল না। এর প্রতিক্রিয়ায় ইম্ফল শহরে এবং তার আশেপাশের গ্রামীণ এলাকাগুলিতে ভারতীয় রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক আধিপত্যের বিরুদ্ধে জনরোষ ক্রমে বেড়ে যেতে থাকে। বহু ছোটখাটো গণ সংগঠন এই সময়ে গড়ে উঠতে শুরু করে যারা মণিপুরে মেইতেই জাতিসত্তা ও অস্তিত্বের বিষয়ে মুখর হয়ে ওঠে।

ভারত সরকারের এই জোর-জবরদস্তি মেইতেইরা প্রথম থেকেই ভাল চোখে দেখেনি। মহারাজা বোধচন্দ্র এবং ভারত সরকারের মধ্যে সংযুক্তিকরণ চুক্তির মেইতেইরা অনেকেই বিরোধিতা করেছিলেন। মণিপুরে তখন থেকেই  ভারত-বিরোধী এক মনোভাব দেখা যায় এবং ভারত থেকে মণিপুরকে স্বাধীন করার জন্য সশস্ত্র সংগ্রামও গড়ে উঠে যা আজ অনেকটাই স্তিমিত। সশস্ত্র বিদ্রোহের পাশাপাশি ভারত বিদ্বেষী মনোভাব থেকে জাতিগত সংঘাতেরও মণিপুর সম্মুখীন হয়েছে। পরে সেটা ব্রাহ্মণ্যবাদী ধর্ম বিরোধী আন্দোলনের রূপ নিতে থাকে। মেইতেইদের অনেকেই ব্রাহ্মণ্যবাদী ধর্ম ছেড়ে নিজেদের পুরনো ধর্মে (সানামাহি) ফিরে যেতে থাকে। বাংলা হরফে লেখা পুঁথিপত্র পুড়িয়ে, তাদের হারিয়ে যাওয়া বর্ণমালা পুনরুদ্ধার, সনাতন সানামাহি ধর্ম পালন এবং নিজেদের ব্রাহ্মণ্যবাদী নাম অবধি পরিবর্তন করতে শুরু করে। সানামাহি ধর্মের পুনরুজ্জীবনের এই সম্মিলিত প্রচেষ্টাকে 'সানামাহি' আন্দোলন বলা হয়। আন্দোলনের সূত্রগুলি খুঁজে পাওয়া যায় ১৯৩০ সালে কাছাড়ে নওরেম ফুলো (লাইনিংহাল নাওরিয়া) দ্বারা আপোকপা মারুপ (মেইতেই মারুপ) গঠনের সময়। এই আন্দোলন ১৯৩৪ সালের মধ্যে মণিপুর উপত্যকায় ছড়িয়ে পড়ে। ১৯৪৪ সালে আজ়াদ হিন্দ ফৌজের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা যুদ্ধে মণিপুরের বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষ জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে শামিল হয়েছিলেন, উজাড় করে দিয়েছিলেন তাঁদের সমর্থন। সেটা একটা বড় কারণ ছিল 'সানামাহি' ধর্মীয় আন্দোলনের গতি না পাওয়ার, তবে প্রাথমিকভাবে তাখেল্লাম্বাম বোকুলের (সানামাহি বোকুল) নেতৃত্বে আন্দোলনকে তীব্র করার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। ফুলো ১৯৪১ সালে মারা যান। ১৯৪৪ সালে ফুলোর মৃত্যুর তিন বছর পর, মণিপুরে শেষ পর্যন্ত 'সানামাহি' আন্দোলন গতি পেতে শুরু করে। মণিপুরে ব্রাহ্মণ্যবাদী ধর্মের বিরোধিতা এবং সানামাহি ধর্মের পুনরুজ্জীবিত করার জন্য প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। মণিপুরের বিভিন্ন স্থানে সানামাহি ধর্মকে জনপ্রিয় করার জন্য ব্যাপক প্রচার চালানো হয়। ১৪ মে, ১৯৪৫ জনপ্রিয় মেইতেই মারুপ পুর্নগঠিত হয়েছিল। এটি অন্যান্য বিষয়ের সাথে মণিপুরি ভাষার মূল লিপি, সানামাহিজম এবং মেইতেই মায়েকের পুনরুজ্জীবনের সূচনা করে। সানামাহিজম এবং 'মেইতেই মারুপ' শব্দটি পরস্পরের সমার্থক শব্দ হিসেবে প্রায়শই ব্যবহৃত হয়। ১৯৭০ এবং ১৯৮০-র দশকে, সানামাহি আন্দোলন বহু সংখ্যক কর্মীকে আকৃষ্ট করে। দেবতাদের উপাসনালয়গুলি পুনরুদ্ধার করতে এবং সানামাহিজমের প্রাচীন পুরানো ঐতিহ্যের জন্য ব্রাহ্মণ্যবাদী ধর্মের প্রথা বা উপাসনার বিরুদ্ধে বিশাল অভিযান শুরু করে। উল্লেখযোগ্য আন্দোলন ছিল ব্রাহ্মণদের কাছ থেকে সানামাহি এবং লেইমারেল সিদাবির মূর্তি বাজেয়াপ্ত করা। আমরা দেখতে পাই ১৬ ফেব্রুয়ারি, ১৯৭৪ ব্রাহ্মণ্যবাদী ধর্ম থেকে গণধর্মান্তরের ঘটনা ।

বিগত দশকগুলিতে মেইতেইদের অনেক সামাজিক, ধর্মীয় ও রাজনৈতিক সংগঠন সানামাহি ধর্মকে সংখ্যালঘু ধর্ম হিসাবে ভারত সরকারের স্বীকৃতি আদায়ের জন্য সহিংস ও অহিংস আন্দোলন গড়ে তোলে। কিন্তু ভারত সরকার সানামাহিকে সংখ্যালঘু ধর্ম হিসেবে স্বীকৃতি দিতে রাজি হয়নি। তাই মেইতেইদের মধ্যে সরকারের এই অবস্থানের বিরুদ্ধে আন্দোলনের তেজ ক্রমশ বাড়তে থাকে। এবং এই আন্দোলন উগ্র ব্রাহ্মণ্যবাদী নেতাদের শিরঃপীড়ার কারণ হয়ে উঠেছে।(৪)(৪.১)(৪.২)(৪.৩) উগ্র ব্রাহ্মণ্যবাদী নেতারা সংবাদ মাধ্যম, সামাজিক মাধ্যমকে ব্যবহার করে মেইতেই জাতির আভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বকে চাপা দিতে মণিপুরের মানুষের কাছে নিবিড়ভাবে প্রচার করেছে যে, মণিপুরকে খ্রিষ্টান রাজ্যে পরিণত করার চক্রান্ত চলছে মিশনারিদের নেতৃত্বে। তাই তথাকথিত হিন্দু মেইতেইদের নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষা করার লক্ষ্যে অবিলম্বে ঐক্যবদ্ধ হওয়া এবং প্রয়োজনে অস্ত্র হাতে তুলে নেওয়া অতি প্রয়োজন। (সামাজিক মাধ্যমে এই ধরনের অসংখ্য ভিডিয়ো পাওয়া যাচ্ছে।) এই উগ্র সাম্প্রদায়িক প্রচার একদিকে যেমন মেইতেই জনগোষ্ঠীকে নিয়ে গিয়ে এক সারিতে দাঁড়া করাচ্ছে তেমন আদিবাসী জনগোষ্ঠীর মনে শোষণ, বঞ্চনা আর অনুন্নয়নের স্তুপীকৃত ক্ষোভ, ব্রাহ্মণ্যবাদী উগ্র প্রচারকে কাজে লাগিয়ে খ্রিষ্টান ধর্মগুরুরা অতি সহজে আদিবাসী মানুষকে মেইতেইদের বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ করতে সক্ষম হয়েছে। 

১৯৪৯ সালে ভারতের সঙ্গে মণিপুর সংযুক্ত হওয়ার আগে মেইতেইরা উপজাতি হিসেবেই গণ্য হতেন। সংযুক্তিকরণের পর তাঁদের উপজাতি পরিচয় বাতিল করা হয়। কিন্তু ঘটনা হল ভারতের সংবিধানের ৩৪০ অনুচ্ছেদ মেনে, কাকা কালেলকারের সভাপতিত্বে ২৯ জানুয়ারী ১৯৫৩ রাষ্ট্রপতির আদেশে প্রথম অনগ্রসর শ্রেণি কমিশন গঠন করা হয়। এই কমিশন তফসিলি জাতি ও তফসিলি উপজাতির তালিকা নির্ধারণ করার সময় বিদ্যমান তালিকা পরীক্ষা করে। তফসিলি জনজাতি হওয়ার নির্ণায়ক বিষয়গুলি ভাল করে অনুসন্ধান করে তার ভিত্তিতে তালিকা থেকে কিছু সম্প্রদায়কে বাদ দিয়ে এবং নতুন কিছু সম্প্রদায়কে যুক্ত করে কমিশন ৩০ মার্চ ১৯৫৫ তারিখে তার রিপোর্ট পেশ করে। কমিশন সমগ্র দেশের জন্য ২৩৯৯টি অনগ্রসর জাতি বা সম্প্রদায়ের একটি তালিকা তৈরি করে এবং যার মধ্যে ৮৩৭টি সবচেয়ে পিছিয়ে পড়া জাতি হিসাবে সুপারিশ করে। এই সুপারিশগুলি রাজ্য সরকার, তফসিলি উপজাতি কমিশনার এবং ডেপুটি রেজিস্ট্রার জেনারেলের সাথে পরামর্শ করে এবং যথাযথভাবে পরীক্ষা করে ভারত সরকার এই সুপারিশগুলিকে The Scheduled Caste and Scheduled Tribes Orders (Amendment) Act, 1956 পাশ করে গ্রহণ করে ৷ (Act LXIII of 1956)। 

তালিকা চূড়ান্ত করার আগে দেশের সমস্ত রাজ্যে জনসাধারণের জন্য কমিশন একটি প্রশ্নাবলী পাঠায়। অন্যান্য বিষয় ছাড়াও যেখানে ছিল তফসিলি জাতি এবং তফসিলি উপজাতির তালিকায় অন্তর্ভূক্তি বিষয়ক দু'টি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। “Do you think that the lists of SCs and STs issued under the President’s order need any revisions? If so, what castes or communities do you suggest for inclusion or exclusion from the above mentioned two lists (SCs & STs list)? Please state reasons… Have your state government recommended the inclusion in or exclusion from the existing lists of any tribe, caste or community?”(৫)

মণিপুরের মেইতেই সমাজের মুখিয়াদের প্রভাবশালী অংশ সেসময় নিজেদের মনে করত ব্রাহ্মণ্যবাদী ধর্মীয় ভাবধারার অনুসারী এবং প্রাচীন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের উত্তরাধিকারী। নিজেদের সামাজিক উচ্চ স্তর নিয়ে তারা গর্বিত ছিলেন। পার্বত্য অঞ্চলের জনজাতি আদিবাসীদের তারা ভাবতেন অস্পৃশ্য, নীচু জাতের। তাই তাদের সাথে এক পংক্তিতে থাকতে তারা রাজি হয়নি। ফলে সেসময় কমিশন মেইতেইদের এই অংশের দাবি ও রাজ্য সরকারের সুপারিশ মেনে তাদের নাম উপজাতির তালিকা থেকে বাদ দিয়ে দেয় এবং মেইতেইদের মধ্যে যারা ব্রাহ্মণ্যবাদী ধর্মীয় ভাবধারা মানতেন না তাদেরকে তফসিলি জাতি তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে। 

১৯৯০ সালে মন্ডল কমিশনের সুপারিশ ভারত সরকার মেনে নিয়ে অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির (ওবিসি) জন্য শিক্ষা ক্ষেত্রে এবং সরকারি ও রাষ্ট্রায়ত্ত উদ্যোগের অধীনে চাকরিতে ২৭% সংরক্ষণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। ফলে এসসি, এসটি এবং ওবিসি-র জন্য মোট সংরক্ষণের শতাংশ ৪৯.৫% করা হয়। মণিপুরের জনসংখ্যার শ্রেণি বিন্যাস, ওবিসি ১৭ %, তফসিলি জাতি ৩.৭৮%, তফসিলি উপজাতি  ৪৫.৪২%, সাধারণ জাতি ৩৩%। মণিপুরে ওবিসি ও সাধারণ জাতি মিলিয়ে জনসংখ্যা মোট জনসংখ্যার ৫০ শতাংশ। চাকরি ও শিক্ষা ক্ষেত্রে তাদের সংরক্ষণের হার ৩৭% [ওবিসিদের জন্য ২৭% ও অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল সেকশন (সাধারণ শ্রেণি)-র ১০%] এবং তফসিলি জাতি ১৫% ও তফসিলি উপজাতি ৭.৫%।

১৯৪৯ সালে ভারতীয় ইউনিয়নে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে সংযুক্ত হলেও পূর্ণাঙ্গ রাজ্য হিসেবে মণিপুর স্বীকৃতি পায় ২১ জানুয়ারি, ১৯৭২। উত্তরে নাগাল্যান্ড, পশ্চিমে অসম, দক্ষিণে মিজোরাম আর পূর্ব ও দক্ষিণে ৩৫২ কিলোমিটার বিস্তৃত মায়ানমার সীমান্ত। মণিপুরের ভৌগোলিক আয়তন ২২,৩২৭ বর্গ কিলোমিটার। রয়েছে ১৬টি জেলা। মণিপুরের কেন্দ্রে অবস্থিত ইম্ফল উপত্যকা, রাজ্যের ভৌগোলিক আয়তনের প্রায় ১০% জমি নিয়ে গঠিত। মূলত মেইতেইরা এই ১০% উর্বর জমিতে বাস করে। বাকি প্রায় ৯০% পাহাড়ি অঞ্চলে বাস করে কুকি, নাগা সহ ৩৪টি জনজাতি গোষ্ঠীর মানুষ। মেইতেই ভাষা গোষ্ঠীর মানুষেরা রাজ্যের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠী (মোট জনসংখ্যার ৫৩.৩০%)। মণিপুরি বা মেইতেইরা পাঁচটি সামাজিক গোষ্ঠীতে বিভক্ত – মেইতেই মারুপ (এরা মেইতেই সংস্কৃতি ও মেইতেই ধর্মে বিশ্বাস করে), মেইতেই খ্রিস্টান, মেইতেই গৌর চৈতন্য, মেইতেই ব্রাহ্মণ (স্থানীয় নাম 'বামোন') ও মণিপুরি মুসলমান (স্থানীয় নাম মিয়া মেইতেই বা পাঙাল)। মেইতেই বা মণিপুরি ভাষা রাজ্যের প্রধান সংযোগ রক্ষাকারী ভাষা। মেইতেই ভাষাকে সংবিধানের ৮ম তফশিলি ভুক্ত বাইশটি সরকারি ভাষার একটি ভাষা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। 

প্রায় এক দশক ধরে নানাভাবে মণিপুরের সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতেইরা আইনিভাবে তফসিলি উপজাতি বা ‘শিডিউলড ট্রাইব’ (এসটি) তালিকাভুক্ত হওয়ার জন্য দাবি জানিয়ে আসছিল। তাদের বক্তব্য, স্বাধীনতার আগে স্বাধীন মণিপুর রাজ্যে তাদের ‘উপজাতি’ হিসেবেই স্বীকৃতি ছিল। স্বাধীনতা ও তারপর ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্রে মণিপুরের অন্তর্ভুক্তির পর তাদের এই তকমা চলে যায়। ফলে জমি জমা আর্থিক ও সাংস্কৃতিক যে সুবিধেগুলি তফসিলি উপজাতিরা পেয়ে থাকেন, তারা তা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এই মর্মে তারা আবেদন রেখেছিলেন মণিপুর হাইকোর্টে। হাইকোর্ট সব আবেদন শুনে রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে, চার সপ্তাহের মধ্যে আবেদনকারীদের দাবি দাওয়া যথাযোগ্য গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করে রাজ্যের অবস্থান জানাতে। 

এর ফলে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন মণিপুরের বাকি উপজাতিরা। তাঁদের বক্তব্য, এতে অন্যায়ভাবে সুবিধে পেয়ে যাবেন মেইতেইরা এবং তাতে আখেরে ক্ষতি হবে নাগা, কুকি-সহ বাকি উপজাতিদের। এমনিতেই মেইতেইরা যথেষ্ট অগ্রসর। রাজ্যের বেশিরভাগ বসতি যেহেতু উপত্যকায়, বিধানসভার আসনও বেশিরভাগ ওখানেই। মেইতেইরাও বিধানসভায় প্রবলভাবে গরিষ্ঠ। তাছাড়া মেইতেইরা বেশিরভাগ সাধারণ জাতিভূক্ত হওয়ায় অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল সেকশন (ইডাব্লুএস) ও অন্যান্য অনগ্রসর জাতি (ওবিসি), সবমিলিয়ে মোট ৩৭% সংরক্ষণের সুযোগ পান। তাঁরা তফসিলি উপজাতিভুক্ত হলে বাকি উপজাতিদের কাজের ক্ষেত্রে বা পড়াশোনায় বা চাকরি-বাকরিতে যতটুকু সুযোগ-সুবিধে ছিল, তাও থাকবে না।

এমনিতেই রাজ্যে কুকি-সহ বিভিন্ন উপজাতিদের দাবি-দাওয়া মেইতেইদের দাপটে চাপা পড়ে যায়। পাহাড়ি এলাকার বাসিন্দা যারা জনজাতি গোষ্ঠীর মানুষ, তাদের তরফে এ দাবিও করা হয়, সমতলের তুলনায় পাহাড়ি অঞ্চলে উন্নয়নের কাজে ১০%-এর বেশি অর্থ বরাদ্দ করা হয় না, এমনকি পাহাড়ি এলাকার জন্য বরাদ্দ অর্থেও সমতলের উন্নয়নের প্রয়োজনে ভাগ বসানো হয়। সংখ্যালঘু হিসেবে যেটুকু তাঁদের ন্যায্য পাওনা, এবার তা থেকেও তাঁদের বঞ্চিত করতে চায় মেইতেইরা। ফলে হাইকোর্টের এই রায়ের বিরুদ্ধে মিছিলের ডাক দিয়েছিল উপজাতি ছাত্রদের সংগঠন ‘অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন অফ মণিপুর’। যেখান থেকে সংঘাত শুরু।

অতীতের বেশিরভাগ সংঘর্ষের ঘটনারই মূলে রয়েছে জমি-সংক্রান্ত সমস্যা। মেইতেইদের একাংশ মনে করে, তারা যে চাইলেই পাহাড়ি এলাকাতে জমি কিনতে পারে না অথচ জনজাতির মানুষেরা ইচ্ছে করলেই সমতলে জমির মালিকানা পেতে পারে, এই বৈষম্য পীড়াদায়ক। সাম্প্রতিককালে মণিপুর সরকার সংরক্ষিত বনাঞ্চলগুলি থেকে আদিবাসী জনতাকে উচ্ছেদ করতে শুরু করেছে। ২০২০ সালে লঙ্গোল সংরক্ষিত বন এলাকায় অন্ততপক্ষে ১৩৪৬টি নির্মাণকে একতরফাভাবে বেআইনি ঘোষণা করে সেইসব বাসিন্দাদের উচ্ছেদের নোটিস ধরানো হয়। সেই বিষয়ক বিভিন্ন মামলা এখনও আদালতে বিচারাধীন। অন্ততপক্ষে ৯৫টি পরিবার এই উচ্ছেদের কারণে উদ্বাস্তু হয়েছে। লঙ্গোল এলাকা ইম্ফলের প্রান্তে পাহাড়ের উপত্যকায় অবস্থিত। এমনকি ইম্ফল থেকেও কুকিদের উচ্ছেদ করা হচ্ছে। 

২০২২ সালের অগাস্ট মাসে রাজ্য সরকারের তরফে বিজ্ঞপ্তি জারি করে চূড়াচাঁদপুর এবং খুপুমের ৩৮টি গ্রামকে সংরক্ষিত বনভূমি এলাকার অন্তর্গত বলে ঘোষণা করা হয়। সেখানে বসবাসকারীদের 'বেআইনি জবরদখলকারী' বলে উল্লেখ করা হয় সরকারের তরফে। তার পর শুরু হয় উচ্ছেদ অভিযান। তাকে ঘিরেও সংঘর্ষ বাধে।

কুকিদের দাবি, সরকারি সমীক্ষা এবং উচ্ছেদ অভিযান সংবিধানের ৩৭১-সি অনুচ্ছেদের পরিপন্থী। সংবিধানে মণিপুরের উপজাতি অধ্যুষিত পাহাড়ি এলাকায় প্রশাসনিক স্বতন্ত্রতার কথা বলা রয়েছে। তারপরেও, মুখ্যমন্ত্রী এন. বিরেন সিং তফসিলি উপজাতিদের জবরদখলকারী বলে উল্লেখ করেন, দাবি কুকিদের। তাঁদের অভিযোগ, সংরক্ষিত বনভূমি হরণ, অভয়ারণ্যে পোস্ত চাষ এবং মাদক কারবারে লিপ্ত বলেও তাঁদের অপমান করেন মুখ্যমন্ত্রী। তার পর থেকে যত সময় যাচ্ছিল ঘনিয়ে আসছিল অশান্তি। ৩ মে, ২০২৩, বুধবার যা কার্যতই বিস্ফোরণের আকার ধারণ করে।

চলতি সংঘর্ষের কোনও নিরপেক্ষ বা সে অর্থে বস্তুনিষ্ঠ বিবরণী পাওয়া অসম্ভব। কারণ, অতীতের দৃষ্টিভঙ্গির উপর নির্ভর করে প্রত্যেক সম্প্রদায়েরই এই বিষয়ে নিজস্ব বক্তব্য বা ব্যাখ্যা রয়েছে। যেমন জনৈক সাংবাদিক তাঁর প্রতিক্রিয়াতে বলেছেন, “বলা হয়ে থাকে প্রত্যেক ঘটনারই দু'পিঠের বিবরণ রয়েছে, এবং সত্যি ঘটনাটি মাঝামাঝি কোথাও অবস্থান করে। তবে মণিপুরের ক্ষেত্রে সত্য যে কেবল মাঝখানটিতে রয়েছে তাই নয়, বহুস্তরীয় ও পারস্পরিক বিরোধিতায় মোড়া গুচ্ছ ব্যাখ্যা ও বক্তব্যতে সম্পৃক্ত হয়ে, তা আরওই জটিল আকার ধারণ করেছে।”

মণিপুরের পরিস্থিতি যে দীর্ঘায়িত হবে তার কয়েকটি অশনিসঙ্কেত এখনই দেখা যাচ্ছে। পূর্ব মণিপুরের জেলাগুলিতে সমীক্ষা করে ভারত সরকারের খনি মন্ত্রক ও জিয়োলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া পেয়েছে বিরাট পরিমাণ খনিজের সন্ধান। লাইমস্টোন, ক্রোমাইট, তামা, নিকেল, ম্যাগনেটাইট, এমনকি মূল্যবান প্লাটিনাম গ্রুপের মৌলও। কেবল লাইমস্টোন ও ক্রোমাইটের পরিমাণই আনুমানিক ২৬ মিলিয়ন টন। জনজাতির বসতি এই জেলাগুলিতে এ বার অরণ্য ও জমি থেকে উৎখাত হবেন আদিবাসীরা। নতুন অরণ্য বিল পাশ হয়ে গেছে সংসদে। আন্তর্জাতিক সীমান্তের ভিতরে ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত অরণ্যভূমিকে মুক্ত করার পথে আর কোনও বাধা থাকল না। অরণ্য আর খনিজ সম্পদের উপর লোভি নজর রয়েছে দেশি বিদেশি শিল্পপতিদের। জনজাতিদের অরণ্য থেকে উৎখাত করা সম্ভব হলে এই সব জমির মালিকানা হস্তান্তর করা যাবে। আর তা ঘটবে রাষ্ট্রীয় মদতে।(৬)

তথ্যসূত্র  

১) মধু চন্দ্রের পুয়া মিথাবা দ্য বার্নিং অফ মেইতেই পবিত্র ধর্মগ্রন্থ। e-pao.net । সংগৃহীত ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

২) নিজ ভাষা নিজ লিপির অধিকার, মধুজা বন্দ্যোপাধ্যায়, আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন, ২৫/২/২০২৩

৩) প্যারাট, জন এড। (১৯৯৮)। মেইতেই (মণিপুরি) বিশ্বাস ও রীতিনীতির নোট। মণিপুর: ইবোয়াইমা প্রিন্টার্স।

৪) Meitei, Langonjam Chingkheinganba "আপোকপা মারুপ_ নাওরিয়া ফুল"

৪.১) সনমাহি ধর্মের জন্য আলাদা কোড উত্থাপন করা হয়েছে: ৬ই আগস্ট ২২ ই-পাও শিরোনাম e-pao.net। সংগৃহীত ৯ আগস্ট ২০২২।

৪.২) চিংখেইঙ্গানবা, সালাম। "ঘর সানামাহিকে সংখ্যালঘু ধর্ম হিসাবে স্বীকৃতি দিতে ব্যর্থ হলে সমাবেশে ভিড় করার হুমকি দিয়েছেন ওকরাম জয় - ইম্ফল টাইমস"। www.imphaltimes.com। সংগৃহীত ৯ আগস্ট ২০২২।

৪.৩) সংখ্যালঘু ধর্মের মর্যাদা চাওয়া হয়েছে"। www.thesangaiexpress.com। সংগৃহীত ৯ আগস্ট ২০২২।

৫) L. Lam Khan Piang, Teaches sociology at the University of Hyderabad, The Wire, May 26, 2023

৬) হিংসা, রাষ্ট্র, গণতান্ত্রিকতা,অনিতা অগ্নিহোত্রী , আনন্দবাজার পত্রিকা, ২৬ জুলাই ২০২৩। 

[প্রথম প্রকাশঃ ঈশান পত্রিকা, মণিপুর সংখ্যা, সেপ্টেম্বর ২০২৩]  

Picture Courtesy: Hindustan Times

Comments

Popular posts from this blog

ফ্যাসিবাদের উত্থানের যুগে সুবিধাবাদের রমরমা

কমিউনিস্ট পার্টি ও তেলেঙ্গানা আন্দোলনের মহিলা কর্মীরা : কমঃ শর্মিষ্ঠা চৌধুরীর কলমে

কেন্দ্র সরকারের ‘জাতীয় শিক্ষা নীতি’ – একটি শিক্ষা বিরোধী ইস্তেহার