Posts

কাল

Image
বিমল কান্তি দাশ গুপ্ত কাল অনন্ত। তার দুই ভাগ। ইহকাল আর পরকাল। সব মিলে তিন কালের ধারণা। মানুষের জন্য আছে দুটো কাল। ইহকাল আর পরকাল। যতদিন মানুষ অরণ্যচারি, জীবন তার ইহকালের সীমানাতে বদ্ধ। জন্ম আর মৃত্যুর সীমানাতেই আটকে থাকা। কিন্তু আটকে থাকা তো জীবনের স্বাভাবিক নিয়ম হতে পারে না। আর সে কারণে মানুষের ব্যবহারিক জীবনের ধারার বদলের সঙ্গে বদল ঘটতে থাকে কালের ধারণাতেও। আর আপাত সেই স্থির ধারণা বিশ্বাসের রূপ নিয়ে সামাজিক মানুষের মনে থিতু হয়ে বসত করছে আদি কাল থেকে। শ্রম আর ধারণার কে আগে আর কে পরে বিবাদে না গিয়েও আটক হয়ে আছে পরকালের ধারণা। যে ধারণা রূপ বদল করে বিশ্বাসের রূপ ধরে শক্ত পোক্ত হয়ে বাস করছে মানুষের মনের জগতে। জীবনের প্রবহমানতাকে আপাত স্বীকার না করেই।   এই ধারণার আদি ধরা আছে সেই কালে, যখন মানুষ তার সংগঠিত পরিবারের প্রাকৃতিক জীবন থেকে সামাজিক জীবনে প্রবেশ করল। সমাজের মানুষের মাঝে কর্মের বিভাজন ঘটল। যার বিকাশ ঘটল অবশেষে শ্রেণি বিভাজনের আকারে। ভাগ্যবান আর বঞ্চিতের বেশ ধরে। যার উৎস নির্দেশ করা হল যার-যার   সামাজিক কর্মফলের নিরিখে। সামাজিক কর্মের অবমূল্যায়ন ঘটিয়ে ব্যক্তি মানুষের দায় বলে সেটাক

সি পি আই (এম)

Image
বিমল কান্তি দাশ গুপ্ত সি পি আই ( এম ) । ভারতে মার্ক্সবাদীদের সব চেয়ে প্রভাবশালী সংগঠিত দল । ভারতে মার্ক্সবাদের ভালো - মন্দ - র দায় তাদের সব থেকে বেশি । কার্ল মার্ক্সকে তারা দুমড়ে মুচড়ে দলের কেন্দ্রীয় কমিটির দফতরের আয়তনে প্রতিষ্ঠা করে রেখেছে । মার্ক্সকে সাধারণের বোধগম্য করতে তাদের প্রধান হাতিয়ার লেনিন । সে কারণে এঁদের যেকোন রচনা লেনিনের উদ্ধৃতিতে মুখর । বাংলায়   একটা শব্দবন্ধ আছে ‘ কর্তা ভজা ’ । এদের একটা সংগঠিত ধর্মীয় গোষ্ঠীও আছে । তবে দলের বাইরেও এদের   অস্তিত্ত্ব চোখ এড়ায় না । বাংলাতে সি পি আই এম - এর এমন অনেক ভক্ত আছেন । এঁরা দলের জন্য অর্থ আর সাংস্কৃতিক কাজকর্মের যোগানদারের কাজ করে থাকেন । উকিল মোক্তার পেশকার । বিচিত্র ধরণের কর্মজীবী । উজ্জ্বল আলোয় আলোকিত মাননীয় তর্কবিদেরা । আর কৃতী শিল্পী সাহিত্যিকদের ভিড় এড়িয়ে কোনও প্রকারে একবার যদি খোদ মার্ক্স - এর কাছে পৌঁছনো যায় তা হলে যা পাওয়া যাবে সে অতি সংক্ষিপ্ত আর সরল বিষয় । তাঁর উপদেশ অক্ষরজ্ঞানহীন হত দরিদ্র মানুষের বোধের বাইরে আদৌ নয় । হবেই বা কেন । মার্ক্স হলেন আমাদের কালের ঋষি । আবার ঋষিরা তো জ্ঞানীদের উপদেশ দেন না

ক্ষুদ্র ঋণ ও এনজিও প্রসঙ্গে আনু মহম্মদ (পূর্বতন একটি প্রবন্ধের অনুবাদ)

Image
  বাংলাদেশ - নয়াউদারনীতির একটি মডেল ক্ষুদ্রঋণ এবং এনজিওর কাহিনী আনু মহম্মদ [মহম্মদ ইউনুস বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী হওয়ায় দেখে নেওয়া যাক তাঁর গ্রামীণ ব্যাংকের মডেল সম্পর্কে কমঃ আনু মহম্মদের বক্তব্য। মূল রচনা ২০১৫ সালে 'মান্থলি রিভিউ' পত্রিকায় প্রকাশিত। মূল ইংরেজি রচনা থেকে বঙ্গানুবাদঃ ডিলিজেন্ট পত্রিকা। মূল রচনার লিংকঃ https://monthlyreview.org/2015/03/01/bangladesh-a-model-of-neoliberalism/ ] ২০০৬ সালে মহম্মদ ইউনুসকে গ্রামীণ ব্যাংকের জন্য নোবেল শান্তি পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণার কয়েক মাস পরে আমি জার্মানি সফরে যাই। স্বাভাবিকভাবেই আমি প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে এই পুরস্কার নিয়ে আনন্দ ও গর্ববোধ দেখতে পেয়েছি। বাম শিক্ষাবিদ এবং কর্মী সহ অনেক জার্মানরা এটিকে নয়াউদারবাদের বিজয় হিসাবে দেখেছিল। একটি জার্মান অ্যাক্টিভিস্ট থিয়েটার গ্রুপ আমাকে তাদের সাম্প্রতিক নাটক ‘তসলিমা অ্যান্ড দ্য মাইক্রোক্রেডিট’ দেখার আমন্ত্রণ জানায়। এই অনুষ্ঠান আমার চোখ খুলে দিয়েছিল: আমি বুঝতে পেরেছিলাম যে গ্রামীণ ব্যাংক সম্পর্কে পশ্চিমে কতটা ভুল বোঝানো হয়েছিল এবং কিভাবে মিডিয়া প্রচারাভিযান

হকারি নয়, হকার উচ্ছেদ বে-আইনী!

Image
অভিজ্ঞান চক্রবর্তী  গত জুন মাস থেকে শুরু হয়েছে হকার উচ্ছেদ। মিউনিসিপ্যালিটির সাথে পুলিশও নেমে পড়েছে বুলডোজার দিয়ে হকার উচ্ছেদের অভিযানে। উত্তর প্রদেশের যোগী আদিত্যনাথের বুলডোজার সরকারের বীর গাথার পর পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল কংগ্রেসের সরকার এবার সেই উপাধি পেতে বদ্ধপরিকর। গরীবের পেটে লাথি মারার ক্ষেত্রে রাজ্য সরকার ও পুলিশবাহিনীর এই জুটির জুরী মেলা ভার। আরজিকরের মর্মান্তিক ঘটনার প্রমাণ লোপাটের প্রচেষ্টায় লিপ্ত দুষ্কৃতিদের রুখতে ব্যর্থ বীরপুঙ্গব এই পুলিশের লাঠি কিন্তু খেটে খাওয়া হকারদের দোকান ভাঙতে মহান ভূমিকা পালন করে আসছে। উল্লেখ্য, বিগত বামফ্রন্ট সরকারের আমলে 'অপারেশান সানশাইন'-এর মত কুখ্যাত হকার উচ্ছেদের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের চেষ্টা করা হলেও তীব্র আন্দোলনের ফলে তা রদ হয়ে যায়। এবারে কিন্তু থামানো যায়নি। বরং এবারের তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত হকার উচ্ছেদের বিরুদ্ধে উদীয়মান আন্দোলনকে ভোঁতা করে দিতে তৃণমূলপন্থী বামেরা সেই অপারেশান সানশাইনকেই হাইলাইট করতে ব্যস্ত। ভাবখানা এমন যেন এবারের উচ্ছেদও বামফ্রন্টই করেছে! যাই হোক...    যুব-বিশ্বকাপের সময় থেকেই বেআইনীভাবে হকার উচ্ছেদ শুরু করে তৃণমূল পর

বাংলাদেশের গণজাগরণ

Image
প্রিয়াংশু দে গত জুন মাসে গোটা বাংলাদেশ জুড়ে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের কোটা বিরোধী আন্দোলন শুরু হয়। মুক্তিযোদ্ধাদের বংশধরদের জন্য ৩০% সংরক্ষণ ফিরিয়ে আনার পক্ষে ওই দেশের সুপ্রিম কোর্টের রায়ের ফলে এই আন্দোলনের সূত্রপাত। এর আগে ২০১৮ সালে এই কোটা বিরোধী আন্দোলনের ফলে সরকার এই কোটা বাতিল করতে বাধ্য হয়েছিল। স্বাভাবিকভাবেই ছাত্রছাত্রীদের মনে হয় এই রায় যোগ্যতার ভিত্তিতে চাকরী পাওয়ার পথকে সংকীর্ণ করে দেবে। এই আন্দোলনের বিরুদ্ধে হাসিনা সরকারের হিংস্র প্রতিক্রিয়া আর সামগ্রিকভাবে জনগণের সরকারের প্রতি অসন্তোষের ফলে আন্দোলন খুব শীঘ্রই দেশজুড়ে ছড়িয়ে পরে। দীর্ঘদিনের আর্থিক দুরাবস্থা সামলাতে সরকারের ব্যর্থতা, দুর্নীতি ও মানবাধিকার লঙ্ঘন আর গণতন্ত্রের অনুপস্থিতি আগুনে ঘি ঢালার কাজ করে।  স্বৈরাচারী হাসিনা সরকার আন্দোলনরত ছাত্রযুবদের দাবীপূরণের পরিবর্তে আন্দোলন কঠরহাতে দমনে উদ্যত হয়। ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের অন্যান্য সংগঠন, যুবলীগ আর স্বেচ্ছাসেবকলীগ  আন্দোলনকারীদের সঙ্গে হিংস্রতার সাথে লড়াইয়ে জড়িয়ে পরে। এই সংগঠনগুলো আন্দোলন দমনে আগ্নেয়াস্ত্রও ব্যবহার করে। সরকার পুলিশ, RAB (Rapid Action Battalion), বর্ডার গার্ড