দায় কার?: মোদীর বাংলাদেশ সফরের বিরোধীদের উপর গুলি চালালো হাসিনা সরকার

রূপক গায়েন 


ভারতের প্রধানমন্ত্রীর দুদিন ব্যাপী (২৬-২৭ মার্চ) বাংলাদেশ সফরকে কেন্দ্র করে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে সেখানে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সুবর্ণজয়ন্তী বর্ষ উপলক্ষ্যে নরেন্দ্র মোদীকে সেখানে আসার আহ্বান জানায় হাসিনা সরকার। কিন্তু দেশের এই গরিমালগ্ন উদযাপনকালে গুজরাট দাঙ্গার মুখ, ফ্যাসিবাদী বিজেপি সরকারের প্রধান এবং বাংলাদেশের উপর অর্থনৈতিক আধিপত্য কায়েম করতে চাওয়া মোদীর আগমন কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছে না সে দেশের মানুষ; ফলত দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন স্তরের মানুষ, বিশেষত ছাত্র সংগঠনগুলি বিক্ষোভ কর্মসূচীতে সামিল হয়। অন্যদিকে দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের ভোট প্রক্রিয়াকে প্রহসনে পরিণত করে ক্ষমতাসীন রয়েছে কর্তৃত্ববাদী আওয়ামী লিগ। দেশের বিভিন্ন অংশে মোদী বিরোধী অবস্থান বিক্ষোভে পুলিশের সাথে যৌথভাবে হামলা চালায় আওয়ামী লীগের গুন্ডারা। বিক্ষোভ দমনে গুলি চালিয়ে হাটহাজারী মাদ্রাসার চারজন বিক্ষোভকারী ছাত্রকে নির্বিচারে হত্যা করেছে তারা। সারা দেশে মোট ১১জন মৃত। এইভাবে দমন পীড়নের মধ্য দিয়েই সে দেশে মুক্তিযুদ্ধের সুবর্ণজয়ন্তী পালিত হচ্ছে, যা নিন্দনীয়।

বস্তুত বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের ভূমিকা অপরিসীম। তদানীন্তন ভারতের প্রধানমন্ত্রীর হাত ধরেই ভারত-সোভিয়েত মৈত্রী সম্পর্ক গড়ে ওঠে যা মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের স্বাধীনতা লাভের ভিত শক্ত করে। অন্যদিকে পাকিস্তানের পক্ষে থাকা যুদ্ধকামী,  বিভেদকামী ইউএস-এর অঙ্গুলি হেলনে তৎকালীন ভারতের বিরোধী দল জনসংঘ (যা বর্তমানে বিজেপি) প্রচার করতে থাকে যে তাড়াতাড়ি যুদ্ধে লিপ্ত হতে হবে ভারতকে। এর ফলে মার্কিন স্বার্থ অনুযায়ী পাকিস্তানের বিজয় লাভের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পাওয়ার কথা। সে সময়ে পৃথক দেশ হিসেবে স্বীকৃতি না দিয়ে ভারতভুক্ত করার দেশব্যাপী ঘৃণ্য আন্দোলনের পরিবেশ তৈরি করেছিল সংঘ যার প্রসাদস্বরূপ মোদীর এবারের অমোঘ উবাচ-উনি নাকি আন্দোলন করে মুক্তিযুদ্ধের সময় জেলে গিয়েছিলেন। ইতিহাসকে দুমড়ে মুচড়ে ফেলা মোদীর এই বক্তব্যে বিতর্কের মাঝে বাংলাদেশে অরাজকতার সুযোগ নিয়ে মৌলবাদীরা হিন্দুদের উপর আক্রমণ করতে শুরু করেছে। পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ...

Comments

Popular posts from this blog

ফ্যাসিবাদের উত্থানের যুগে সুবিধাবাদের রমরমা

কমিউনিস্ট পার্টি ও তেলেঙ্গানা আন্দোলনের মহিলা কর্মীরা : কমঃ শর্মিষ্ঠা চৌধুরীর কলমে

কেন্দ্র সরকারের ‘জাতীয় শিক্ষা নীতি’ – একটি শিক্ষা বিরোধী ইস্তেহার