Posts

Showing posts from December, 2021

চিলি: গেব্রিয়েল বরিক কি আলেন্দের উত্তরসূরি?

Image
সুরজিত মন্ডল  সাম্প্রতিক চিলির রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে গেব্রিয়েল বরিক জয়ী হয়েছে। বরিক জয়ী হওয়ার ফলে সারা বিশ্বজুড়ে বামপন্থীদের মধ্যে উল্লাস এবং উন্মাদনা দেখা দিয়েছে। বরিকের পরিচয়, কোন রাজনৈতিক ধারা থেকে তার উত্থান এবং শুরু থেকে সে যে অবস্থানগুলো নিয়েছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে ভবিষ্যতে কোন ধরনের রাজনৈতিক অবস্থান সে নিতে পারে এবং প্রেসিডেন্ট হিসেবে সংসদের কতটা সমর্থন লাভ সে করবে, তা নিয়ে এই আলোচনা। সম্ভবত, ওই দেশে এই প্রথম তথাকথিত নন-পার্টিজান বা অরাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনের কোনো প্রতিনিধি সরাসরি রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে জয়লাভ করল। বরিক কোন রাজনৈতিক ধারা থেকে এসেছে, সেটা বুঝতে গেলে জানা দরকার চিলির রাজনৈতিক ইতিহাস। লক্ষণীয় যে সালভাডর আলেন্দে চিলির রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হওয়ার তিন বছরের মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এয়ার স্ট্রাইক-এর মাধ্যমে তাঁর সরকারের পতন ঘটিয়েছিল; প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল অগাস্টো পিনোশের সামরিক একনায়কতন্ত্র। সেই একনায়কতন্ত্রের শেষ লগ্নে ডানপন্থীদের মধ্যে থেকেই পিনোশের একনায়কতন্ত্রের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া শুরু হয় এবং বিভিন্ন বিরোধী জোট তৈরি হতে শুরু করে। এদের মধ্যে আমাদের দেশের

G20: ইঙ্গিত কোনদিকে?

Image
আলোচনায়ঃ মৌ বাছার গত ৩০ এবং ৩১শে অক্টোবর রোমে জি-টোয়েন্টি বৈঠক হয়েছে। এই প্রথমবার ইটালিতে এই বৈঠক হল। অবশ্যই জনবিরোধী অবস্থানেরই পাল্লা ভারী থাকাটাই স্বাভাবিক কারণ জি-টোয়েন্টিভুক্ত দেশগুলোর অনেক দেশেই এখনো অব্দি অতি ডানপন্থী সরকার রয়েছে এবং যেখানে যেখানে নেইও, তারাও এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে নয়াউদারবাদী অর্থনীতির যে আভ্যন্তরীণ সমস্যা, তাতে জর্জরিত হয়ে বেশকিছু স্বৈরতান্ত্রিক অবস্থান বা জনবিরোধী পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হচ্ছে। লক্ষণীয় যে এই রোম ঘোষণায় বারংবার আবহাওয়া পরিবর্তন বা 'ক্লাইমেট চেঞ্জ'-এর কথা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে কিন্তু এটা আমরা জানি যে বিগত প্যারিস চুক্তির সময় থেকে আজ অব্দি কোন নির্দিষ্ট রূপরেখা তৈরি তো করা যায়নি বরং বারংবার যে বিধিনিষেধগুলোর কথা বলা হয়েছে সারা পৃথিবী জুড়ে, পরিবেশ সংক্রান্ত সমস্যাগুলো নিবারণের উদ্দেশ্যে, সেগুলো মানা হয়নি। উল্লেখ্য, আমাদের দেশের বর্তমান কেন্দ্র সরকার (জি-২০ ভুক্ত), রাজ্য সরকারের সাথে হাত মিলিয়ে পশ্চিমবঙ্গের দেউচা-পাচামীতে পৃথিবীর সর্ববৃহৎ খোলা মুখ কয়লা খনির প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে; তাদের পরিবেশ সংক্রান্ত এই বার্তা হাঁসির চুটক

গোলাপী জোয়ারে লাল স্রোত: ভেনেজুয়েলার এল মাইজাল কমিউনে ভ্রমণ

Image
ক্রিস গিলবার্ট প্রথম প্রকাশ: মান্থলি রিভিউ; ১লা ডিসেম্বর, ২০২১ ( https://monthlyreview.org/2021/12/01/red-current-pink-tide/ ) বঙ্গানুবাদ: ডিলিজেন্ট পত্রিকা ২০১৮ সালে ভেনেজুয়েলার সোশ্যাল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে লোকেদের গবাদি পশুকে পাথর ছুঁড়ে মারার ভয়ঙ্কর ছবি ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে। ভিডিওগুলি গ্রামাঞ্চল থেকে আসছিল এবং দেখাচ্ছিল যে লোকেরা ক্ষুধার্ত এবং নিঃস্ব হয়ে তাদের গবাদি পশু মেরে এবং মাঠে কসাই করে নিজেদের দুর্দশার সমাধান করছে। ভেনেজুয়েলার শহরবাসীরা আতঙ্কে ভুগছিল, কিন্তু তারাও পরিস্থিতি বুঝতে পেরেছিল। অর্থনৈতিক সঙ্কট এবং মার্কিন নিষেধাজ্ঞা সকলের উপর কঠোরভাবে চেপে বসেছিল। সাধারণ ভেনেজুয়েলাবাসী কুড়ি পাউন্ড করে হারিয়েছিল, বেশিরভাগের গায়ে ছিল ঢিলেঢালা কাপড় এবং ওষুধের অভাব ছিল। তখন এটা খুব একটা আশ্চর্যের বিষয় ছিল না যে দেশের সবচেয়ে দরিদ্ররা বসে বসে অনাহারে না থেকে পরিস্থিতি নিজেদের হাতে তুলে নিচ্ছে। অন্তত কয়েক রাতের জন্য তারা কম ক্ষুধার্ত থাকবে। প্রায় একই সময়ে, দেশের মধ্য-পশ্চিমে, ‘এল মাইজাল’ (অর্থ: শস্য ক্ষেত) কমিউনের একদল পাকা যোদ্ধা সঙ্কট-কবলিত দেশের পরিস্থিতির বিশ

প্রকৃতি সংরক্ষণ আন্দোলন - এক লেনিনীয় উত্তরাধিকার

Image
শংকর  বৈকাল হৃদ। রাশিয়ার সাইবেরিয়া অঞ্চল। পূবে তাকালে দেখা যাবে ৬ লক্ষ একর বিস্তৃত বিশাল বারগুঝেনস্কি ঝাপোভেদনিক। সোভিয়েত জমানায় যার সূত্রপাত। ঝাপোভেদনিক --- বিস্তৃত ভূভাগ, যেখানে রক্ষণাবেক্ষণ এবং বৈজ্ঞানিক পরীক্ষানিরীক্ষা ছাড়া মানুষের প্রবেশ নিষেধ। প্রকৃতির মুক্তাঞ্চল। প্রকৃতির উপর মানুষের যে তান্ডব চলল গত কয়েক হাজার বছরে, তা থেকে প্রকৃতিকে রক্ষা করার শেষ মরীয়া সংগ্রাম।  কমিউনিষ্টদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগগুলি প্রায়শই উত্থাপন করা হয়, এবং ফলে যা ক্রমশ জনপ্রিয় অথচ ভিত্তীহীন, তার মধ্যে অন্যতম হল কমিউনিষ্টরা প্রকৃতির ধ্বংসের বিরুদ্ধে মুখ খোলে না। প্রকৃতিকে রক্ষা করার কোনো শিক্ষাই নাকি মার্কসবাদে নেই। নির্বিচার "উন্নয়ন"-এর ধাক্কায় আজ যে মানবসভ্যতাই বিলুপ্তির পথে তা নিয়ে কমিউনিষ্টদের কোনো মাথাব্যাথা নেই, ইত্যাদি এবং ইত্যাদি। অথচ বাস্তবটা একেবারেই অন্যরকম।  সমস্যা আরও জটিল হয়ে যায় যখন মার্কসবাদ বদহজম হয়ে গেছে এমন বহু বামকর্মীই মনে করেন যে, তাঁদের কাজ বোধহয় শুধু মানুষ নিয়ে। নির্দিষ্ট করে বললে, মানব নিয়ে নয়, একটা নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর মানুষ নিয়ে, শ্রেণি বা শ্রমিকশ্রেণি! বাকি সব চুলোয় যাক। মা

স্ত্রীজাতির অবনতি

Image
রোকেয়া শাখাওয়াত হোসেন [জন্ম/মৃত্যুঃ ৯ই ডিসেম্বর ১৮৮০/১৯৩২; ১৪১তম জন্মদিবস উপলক্ষ্যে শ্রদ্ধার্পণ] আমাদের শয়ন-কক্ষে যেমন সূর্যালোক প্রবেশ করে না , তদ্রূপ মনোকক্ষেও জনের। আলোক প্রবেশ করিতে পায় না। যেহেতু আমাদের উপযুক্ত স্কুল কলেজ একপ্রকার নাই। পুরুষ যত ইচ্ছা অধ্যয়ন করিতে পারেন — কিন্তু আমাদের নিমিত্ত জ্ঞানরূপ সুধাভাণ্ডারের দ্বার কখনও সম্পূর্ণরূপে উন্মুক্ত হইবে কি ? যদি কোন উদারচেতা মহাত্মা দয়া করিয়া আমাদের হাত ধরিয়া তুলিতে অগ্রসর হন , তাহা হইলে সহস্র জনে বাধাবিঘ্ন উপস্থিত করেন। সহস্র জনের বাধা ঠেলিয়া অগ্রসর হওয়া একজনের কার্য নহে। তাই একটু আশার আলোক-দীপ্তি পাইতে-না পাইতে চির নিরাশার অন্ধকারে বিলীন হয়। স্ত্রী-শিক্ষার বিরুদ্ধে অধিকাংশে লোকের কেমন একটা কুসংস্কার আছে যে , তাহারা “ স্ত্রীশিক্ষা ” শব্দ শুনিলেই “ শিক্ষার কুফলের ” একটা ভাবী বিভীষিকা দেখিয়া শিহরিয়া উঠেন। অশিক্ষিত স্ত্রীলোকের শত দোষ সমাজ অম্লানবদনে ক্ষমা করিয়া থাকে , কিন্তু সামান্য শিক্ষাপ্রাপ্ত মহিলা দোষ না করিলেও সমাজ কোন কল্পিত দোষ শতগুণ বাড়াইয়া সে বেচারীর ঐ “ শিক্ষার ” ঘাড়ে চাপাইয়া দেয় এবং শত কণ্ঠে সমস্

হন্ডুরাস: কাস্ত্রো কি বামপন্থী থাকতে পারবে?

Image
সুরজিত মন্ডল   সাম্প্রতিক ২০২১-এর হন্ডুরাসের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে লিব্রে পার্টির তরফ থেকে জিয়ামারা কাস্ত্রো রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়েছেন। কংগ্রেসে তাঁদের পার্টির সংখ্যাধিক্য থাকলেও একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা তাঁর পার্টি পেতে পারেনি, ফলে জোট করেই কংগ্রেসে সংখ্যাগরিষ্ঠতা তৈরি করতে হবে। কংগ্রেসে বরং  ডানপন্থী ন্যাশনাল পার্টির বিশেষ প্রভাব থাকতে চলেছে। 'লিব্রে' একটা স্প্যানিশ শব্দ থেকে আসছে, যার অর্থ মুক্তি। লিব্রে পার্টি তৈরি হয়েছে ২০১১ সালে এবং পার্টির পুরো নাম হচ্ছে লিবার্টি অ্যান্ড রিফাউন্ডেশান।  ২০০৬ সালে কাস্ত্রোর স্বামী হোসে ম্যানুয়েল জেলায়া রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন তৎকালীন লিবারেল পার্টির তরফে। লিবারেল পার্টি একটি ডানপন্থী পার্টি। জেলায়া  এর আগেও হন্ডুরাসে অন্যান্য যে ডানপন্থী সরকারগুলোর এসেছে, তাদের অর্থ মন্ত্রকের বিভিন্ন দায়িত্বে ছিলেন; উল্লেখ্য যে সোশ্যাল ইনভেস্টমেন্ট বা সামাজিক বিনিয়োগ দপ্তরে তিনি কাজ করেছিলেন এবং তাঁর বিরুদ্ধে অনেক সময় আর্থিক কারচুপির যেমন অভিযোগ উঠেছে, বিভিন্ন অন্যান্য দুর্নীতির অভিযোগও উঠেছে। তিনি মোটামুটি ডানপন্থী অর্থনীতির কাছাকাছিই অবস্থান কর

TWENTY MINUTES TO FREEDOM

Image
Sumit Ghosh     [ First Published:  presently defunct 'Now' magazine, 2017 Author's Note:  I wrote the original article in 2017. Owing to changing socio-economic and political context, the present article has been updated from the original one, with several omissions and new additions. For example, a paragraph on the analysis of 2017 Uttar Pradesh Assembly Elections has been removed in this updated text. The paragraphs on experiences with the ISF and Tripura's Gana Mukti Parishad are new inculcations. Study and inclusion of Com. Dasharath Dev's organizational innovation for social inclusion has strengthened Com. Ranadive's call of class struggle. Hence, the concluding statement has been modified accordingly. ] At present, most of the Dalit organizations endorsing Ambedkarite ideology are quite leader centric and ideologically fluid. Some schools strongly oppose the Manusmriti while the others are more concerned with their rights, the tactics being to sup