মাইক্রোফিন্যান্স - ক্ষুদ্র ঋণ: ট্র‍্যাপ, লড়াই এবং কিছু অপ্রকাশিত কথা

বিশেষ আলোচনা


২০০৬ সালে মহম্মদ ইউনুসকে গ্রামীণ ব্যাংকের মাইক্রোফিন্যান্স মডেলের জন্য নোবেল শান্তি পুরস্কার দেওয়া হয়। আজ এই মাইক্রোফিন্যান্স মডেল ছড়িয়ে পড়েছে বাংলাদেশ সহ ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, শ্রীলঙ্কার মত দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর সাথে সাথে আফ্রিকা মহাদেশের গরীব দেশগুলোতেও [১]। আমরা বর্তমান আর্থসামাজিক অবস্থার আয়নায় দেখার চেষ্টা করব যে মাইক্রোফিন্যান্স আদতেই দারিদ্র দূরীকরণে কতটা সক্ষম বা উৎসাহী! আফ্রিকায় বেড়ে ওঠা চাইনিজ মাইক্রোফিন্যান্স কোম্পানিগুলির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ কিন্তু অন্য কথাই বলে। ২০২৪ সালে কেনিয়ায় আনা ফাইন্যান্স বিলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভের সময়ে এই মাইক্রোফিন্যান্স সংস্থাগুলির পরিচালন ও ইন্টারেস্টের উপরও প্রশ্ন উঠেছিল [২]! এখন প্রশ্ন, মাইক্রোফিন্যান্স কি বিশ্বজুড়ে নয়াউদারবাদের বিকল্প ছিল নাকি তার একটি প্রয়োজনীয় পরিপূরক হিসাবে জন্মেছিল। 

প্রসঙ্গত, যেখান থেকে এই মাইক্রোফিন্যান্স মডেলের উৎপত্তি সেই বাংলাদেশে দারিদ্র দূরীকরণে এই মডেলটি সম্পূর্ণ ফেইল করেছে। বাংলাদেশের অনেক গবেষণায় দারিদ্র্য নিরসনের হাতিয়ার হিসেবে ক্ষুদ্র ঋণের সীমাবদ্ধতা প্রথম দিকে প্রকাশ করা হয়েছে। "১৫টি গ্রামের ১৪৮৯টি পরিবারের মোট নমুনার উপর একটি সমীক্ষায়, ঋণগ্রহীতাদের মাত্র ৫ থেকে ৯ শতাংশকে তাদের অর্থনৈতিক উন্নতির জন্য ক্ষুদ্র ঋণ ব্যবহার করতে দেখা গেছে; তাদের অনেকের আয়ের অন্যান্য উৎসও ছিল"। অন্য একটি গবেষণায়, কিউ.কে আহমেদ এবং অন্যরা দেখতে পান যে ২,৫০১ উত্তরদাতার মধ্যে ১,১৮৯ জন তাদের মাইক্রোলোনের বকেয়া কিস্তি সময়মত পরিশোধ করতে পারেননি। আহমেদ দেখতে পান যে তাদের মধ্যে ৭২.৩ শতাংশকে মহাজন এবং অন্যদের কাছ থেকে উচ্চ সুদে টাকা ধার করতে হয়েছে আর প্রায় ১০ শতাংশকে ঋণ শোধ করার জন্য ছাগলের মত সম্পদও বিক্রি করতে হয়েছে৷ 

বাংলাদেশের ঋণগ্রহীতার সংখ্যা এবং ঋণের পরিমাণ ২০০৯ সাল থেকে হ্রাসের প্রবণতা দেখাতে শুরু করে। বিশ্বব্যাংক দ্বারা গঠিত দারিদ্র্য মূল্যায়নের জন্য কমিশনের করা একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে যে ২০০৩ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত সক্রিয় সদস্যদের সংখ্যার বার্ষিক বৃদ্ধির হার ছিল ১২.৫ এবং ১৭.৮৫ শতাংশের মধ্যে। এটা অনির্দিষ্টকালের জন্য চলতে পারেনি। উল্লেখযোগ্যভাবে, ২০০৯ সাল থেকে সদস্যপদ হ্রাস উপরের রিপোর্টে পাওয়া যায়; প্রথম ২০০৯ সালে -০.৫৫ শতাংশ এবং ২০১০ সালে -৩.০৪ শতাংশ [৩]। তবে বিশ্বব্যাপী ফিন্যান্স ক্যাপিটালের দ্বারা "MFI (মাইক্রোফিন্যান্স ইন্সটিটিউশান) - মহাজন হয়ে সর্বস্ব খুঁইয়ে নিস্ব হওয়ার" এই মাইক্রোক্রেডিটের debt (ডেট) বা ডেথ সার্কেল শুধু বাংলাদেশে নয় ভারতেও এখন প্রকট এবং তা ব্যাপকভাবেই!  

MFIN (মাইক্রোফিন্যান্স ইন্সটিটিউশান্স)-এর একটি রিপোর্টে জানা যায় যে উদ্ভবের সময় থেকে (২০১২ সাল) মাইক্রোফিন্যান্স সেক্টর প্রায় ২৬ গুণ বৃহৎ হয়ে ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে ৪ লক্ষ ৩৩ হাজার কোটি টাকায় পরিণত হয়েছে [৪]।

The Economic Times-এর একটি রিপোর্ট অনুযায়ী NBFC-MFI (নন-ব্যাংকিং ফাইন্যান্সিয়াল কম্পানি - মাইক্রোফিন্যান্স ইন্সটিটিউশান)-গুলি ২০২৪ অর্থবর্ষে প্রায় ২৩.৬% বৃদ্ধি পেয়েছে [৫]। ওই একই রিপোর্ট জানায় যে, জুন ২০২৩-এ পাওয়া তথ্যানুযায়ী NBFC-MFI-গুলো মাইক্রোফিন্যান্স মার্কেটে তাদের শেয়ার ৪১.২% বাড়িয়ে তুলেছে যা আগের অর্থবর্ষে ছিল ৩৫% [৬]। অন্যদিকে রয়টার্স-এর রিপোর্ট জানায়, ফেব্রুয়ারি ২০২৫ পর্যন্ত পাওয়া তথ্যে ভারতীয় ব্যাংকগুলির সামগ্রিক লোন গ্রোথ ১৬.৬% থেকে ১২%-এ নেমে এসেছে [৭]। একইসাথে এও দেখা যায় যে মাইক্রোফিন্যান্স লোনের রিকভারি রেটও বিশাল, প্রায় ৯৫.৭ শতাংশ, যেখানে ব্যাংকগুলির তা ২৭% এর কম এবং ব্যপক পরিমাণ NPA (নন-পার্ফর্মিং অ্যাসেট) রয়েছে [৮] (Chart 1)। ফলে এটা বলা কি খুব অস্বাভাবিক যে মেহুল চোকসি, নীরব মোদী, বিজয় মাল্যদের দেনা আজ মেটাচ্ছে খেটে খাওয়া জনসাধারণ?  

Chart 1


মাইক্রোফিন্যান্সের ব্যপক গ্রোথ দেখে ব্যাংকগুলোও নেমে পড়েছে মাইক্রোক্রেডিটের ব্যবসায়। ব্যাংকের মাইক্রোক্রেডিট-এর গ্রোথ রেট (Chart 2)-এ পাওয়া যাবে [৬]। এমনকি আদানী, টাটা, বাজাজের মতো সংস্থাও এই মাইক্রোক্রেডিট ব্যবসার মধু থেকে দূরে থাকতে পারেনি। 

Chart 2

ব্যাংক লোনের মডারেট গ্রোথ এবং মাইক্রোক্রেডিটের এই উত্তোরত্তর ব্যপক বৃদ্ধির মাঝে রয়েছে RBI-এর regulatory measures যা মাইক্রোফিন্যান্সের ক্ষেত্রে অনেকটাই শিথিল এবং পরিচালনার অভাবে ব্যর্থ। মাইক্রোফিন্যান্সের জারিজুরিকে বুঝতে গেলে আগে তার স্ট্রাকচার এবং পরিচালন ব্যবস্থাকে গভীরভাবে বুঝতে হবে। 

মাইক্রোফিন্যান্সের জন্ম ও কার্যপদ্ধতি 

১৯৯০-এর দশকে ক্রেডিট নীতিতে কর্পোরেটদের পক্ষে বদল আনা হয়। বেসরকারি ব্যাংকগুলিকে গ্রামীণ এলাকায় শাখা খোলার অনুমতি দেওয়া হয়। গরিবদের ঋণ দেওয়ার অন্য সংস্থাগুলিকে উৎসাহিত করা হয়। এর ফলেই জন্ম নেয় মাইক্রোফিনান্স সংস্থা এবং কর্পোরেট ঋণদাতা। জাতীয়করণ হওয়া ব্যাংকের গ্রামীণ শাখার সংখ্যা কমে আসে, সরকার নিজে সামাজিক কল্যাণের পথ থেকে সরে আসে এবং কর্পোরেট ফিনান্স প্লেয়ারদের নীতিগত সমর্থন দেয় - MFI-এর উত্থান ঘটে। দুটি বেসরকারি ঋণ ব্যবস্থা গড়ে ওঠে - এক, SHG ব্যাংক লিংকেজ প্রোগ্রাম এবং দুই, MFI। MFI-গুলি SHG (সেল্ফ হেল্প গ্রুপ)-এর মাধ্যমে ঋণ দিতে শুরু করে। তারপর আসে Joint Liability Group (JLG)-এর ধারণা। এখানে একজন ঋণ না শোধ করলে, পুরো দলকেই দায় নিতে হয়। ফলে মহিলাদের উপর সামাজিক চাপ ও মানসিক চাপ বেড়ে যায়। এই গ্রুপগুলোর মধ্যে দিয়েই মাইক্রোফিন্যান্স গ্রামের দিকে প্রসারিত হয়েছে [৯]। 

পশ্চিমবঙ্গের গ্রামাঞ্চল, মফস্বল এবং মেট্রোপলিটানের বাইরে semi-urban এবং urban অংশগুলোতে (বড়লোকেদের কলোনীর বাইরে এবং মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত এবং নিম্নবিত্তদের মধ্যে) এই মাইক্রোফিন্যান্স তার ব্যবসাকে ছড়িয়ে দেয় লোকাল ব্রোকারদের মাধ্যমে। এই সমস্ত এলাকায় "স্যার" শব্দটি মাইক্রোফিন্যান্সের ইনস্টিটিউশনের কর্মীদের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয় যারা টাকা তুলতে আসেন। এখন এই কর্মীদের নিয়োগ এবং এরা কিভাবে কাজ করে সেটা বুঝতে গেলে আপনি দেখে নিতে পারেন  ২০১৭ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত নীলমাধব পান্ডার "করভি হাওয়া" বা রাজ চক্রবর্তীর নির্দেশনায় বনি চক্রবর্তীর "বরবাদ" ছবিটি যেখানে দেখানো হয় যে কোনো বিষয়ে গ্র‍্যাজুয়েশন বা উচ্চমাধ্যমিক করার পরেই জুটে যেতে পারে একজন মাইক্রোফিন্যান্সের এজেন্ট-এর কাজ, যদি সাথে থাকে একটা বাইক। চারদিকে এই চাকরির আকালের মাঝে যেখানে পড়াশুনা করেও চাকরির পরীক্ষার প্যানেল দুর্নীতির জন্য বাতিল হতে দেখতে হচ্ছে সেখানে গ্র‍্যাজুয়েশনের পর এইরকম চাকরি লুফে নেওয়াই দস্তুর। "করভি হাওয়া" ছবিতে এই স্যারকে যমদূত বলা হয়। এই স্যারদের কাজ হল মহিলাদেরকে ভয় দেখিয়ে, টিভি, ফ্রিজ তুলে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে যেন তেন প্রকারেণ টাকা উদ্ধার করা। এরা টাকা না পাওয়া পর্যন্ত লোনগ্রহীতার বাড়িতেই বসে থাকবেন এবং চেল্লামেল্লি করবেন। ফলে এদের হাত থেকে বাঁচতে এবং মানসম্মান রক্ষা করতে যেন তেন প্রকারেণ টাকা জোগাড় করতে বাধ্য হয় বাড়ির মহিলারা এবং পড়ে গিয়ে আরো কোনো বড় সুদখোরের পাল্লায়! এই স্যারেদের বেআইনীভাবে বাড়ি থেকে মাল মাইক্রোফিন্যান্স অফিসে নিয়ে যাওয়ার ঘটনারও নজির আছে। একইসাথে এরা বেআইনীভাবে গ্রহীতার অরিজিনাল পরিচয়পত্র বা ATM কার্ডও আটকে রাখে কিস্তি পরিশোধে ব্যর্থ হলে। প্রসঙ্গত, এই স্যারেরা আসলে আজকের দিনের ক্রেডিট কার্ড গুন্ডারই মাইক্রো ভার্সন! যদিও এই কথা না বললেই নয় যে এদের মাইনা খুবই কম। প্রায় ৮০০০ থেকে ৯০০০ টাকা এবং চাকরি ও কমিশন নির্ভর করে লোন রিকভারির উপর! আর মাইক্রোফিন্যান্স সংস্থাগুলি লোকাল এরিয়ায় ঢোকে একজন ব্রোকারের মাধ্যমে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায় যে এই ব্রোকার শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী বা নেতৃত্ব! 

মাইক্রোফিন্যান্সের লোকাল সিস্টেমকে না বুঝলে এর ভয়াবহতা বোঝা অসম্ভব! MFI-এর কর্মীরা মহিলাদের প্রলুব্ধ করার ও শোষণ করার কায়দায় বিশেষজ্ঞ। এই nBFC (নন-ব্যাংকিং ফাইন্যান্সিয়াল কম্পানিজ)-গুলি তথাকথিত ‘সহজ’ ভোগ্য ঋণ দেয় এবং তা মহিলার বাড়িতেই দেওয়া হয়। কিন্তু প্রকৃত সুদের হার তারা জানায় না। যখন মহিলারা জিজ্ঞেস করে, “কত কিস্তিতে শোধ করতে হবে?” - তারা বলে, “দুই বছরে”। শুরুতে কিস্তির নির্দিষ্ট পরিমাণ কিছু বলা হয় না। বলে, “ঋণ শোধ করতে হবে না, শুধু সুদটাই দাও” [৯]। 

শহরতলিতে দেখা যাচ্ছে যে এই মাইক্রোফিন্যান্সের কম্পানিগুলোতে বাহারী নাম দিয়ে মোটামুটি ৭ বা ১০ জন মহিলার একটি গ্রুপ তৈরী করা হয়। একজন মহিলাকে গ্রুপ লিডার তৈরি করা হয় যার কাজ হচ্ছে এই "স্যার"-কে টাকা উদ্ধারে সাহায্য করা। এই গ্রুপ লিডার কিন্তু অধিকাংশ সময়ে শাসক দল অর্থাৎ তৃণমূল কংগ্রেস ঘনিষ্ঠ এবং অনেকক্ষেত্রে দলীয় পদে আসীন! এদের কাজ হচ্ছে যে মহিলা বা পরিবার লোন দিতে পারছেন না তাদেরকে বাকিদের সাথে মিলে "ব্যাশিং" করা, রাস্তাঘাটে অপমান করা, যাতে লোনের টাকা উদ্ধার করা যায়। এদের এই "স্যার"দের সাথে খুবই ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকে এবং এরা লোনে প্রদত্ত টাকার একটা পার্সেন্টেজ আত্মসাৎ করতে পারে। এই মাইক্রোফিন্যান্স সংস্থাগুলি সবসময় মহিলাদেরকে নিয়েই গ্রুপ বানায় কারণ মহিলাদের থেকে টাকা উশুল করা সহজ। গৃহস্থ মহিলাদের পক্ষে একটা দীর্ঘ সময় বাড়ির বাইরে থাকা সম্ভব নয় এবং বাকি মহিলাদের দিয়ে ব্যাশিং করিয়ে এদের পারস্পরিক সম্পর্ককেও বিষিয়ে দেওয়া যায়। ফলে এক সময় মহিলারা বাধ্য হন লোন গ্রুপের কারো কাছ থেকে সুদে টাকা ধার করে টাকা পরিশোধ করতে বা অনেক সময় তথাকথিত মহাজনের কাছেও যেতে হয় অনেকগুলো লোনের কিস্তি মেটাতে বড় পরিমাণ টাকা ধার নিতে।

এই লোনের এন্ট্রি এবং প্রসেস সিস্টেমটাও খুবই সেঁকেলে! এই "স্যার"-রা লোনের এন্ট্রি নিজেদের ল্যাপটপে টপাটপ তুলে নিলেও গ্রহীতাদের লোনের খাতায় (লোনের স্টেটমেন্ট হিসাবে মেইনটেইন হওয়া খাতা; প্রত্যেক সপ্তাহে সেখানে লোনের ম্যানুয়াল এন্ট্রি করা হয়) টিক মেরে সাইন করে ছেড়ে দেন এবং কোনো e-statement অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অ্যাক্সেস করা যায় না। এমনকি কোন কিস্তিতে কত টাকা পেনাল্টি হিসাবে কেটেছে তার কোনো বিবরণ এই লোনের খাতায় থাকেনা বরং উল্টে জানতে চাওয়া হলে লোনটা পরিশোধের পরে দেওয়া হবে জানানো হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই লোনে নিয়ে থাকা কম শিক্ষিত বা টেকনিক্যাল মারপ্যাঁচ না বোঝা মহিলারা সার্ভিস সেন্টারে ফোন করে এই তথ্য বার করতে পারেন না। এছাড়াও এই সংস্থাগুলির হেড অফিস নির্দিষ্ট হলেও এরা লোকাল অফিস বিভিন্ন সময় বদলান। লোকেরা একত্র হয়ে ঝামেলা করতে চাইলে তার হাত থেকে বাঁচতে এই পদ্ধতি। ফলে খুবই পরিকল্পনামাফিক এরা এই সিস্টেমকে চালিয়ে যাচ্ছে। একইসাথে রয়েছে ওপরমহলের সাথে যোগাযোগ। 'বন্ধন'-এর মত সংস্থাগুলো চেম্বার অফ কমার্স ও বিভিন্ন সরকারি অনুষ্ঠানে স্পনসরও করে থাকে। 

মাইক্রোফিন্যান্সের চার্জেস এবং সুদের হারের নিয়ন্ত্রণে RBI-এর ভূমিকা

বাবাসাহেব আম্বেদকর সংবিধান পেশ করার সময় বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেছিলেন যে একটা দেশের সংবিধান কতটা ভালো বা খারাপ হবে সেটা নির্ভর করে তার পরিচালনা বা নিয়ন্ত্রণের ওপরে। RBI-এর মাইক্রোফিন্যান্সের উপর রেগুলেশন অনেকটা সেরকমই, যেখানে MFI-কে প্রচুর সুবিধা দেওয়ার সাথে সাথে যে রেগুলেশনগুলো দেওয়া হয়েছে তার বাস্তবে কোনো প্র‍্যাক্টিস নেই। প্রথাগত ব্যাংকের লোনের থেকে মাইক্রোফিন্যান্সের লোনের ফি কাটা যায় অনেক বেশী কিন্তু লোনের পরিমাণ ছোট হওয়ায় সেটা বোঝা যায় না। যদি একটা গ্রুপের মোট লোন বা এলাকায় গ্রুপগুলিতে চলা মোট লোনের প্রেক্ষিতে সেটা দেখা যায় তবে বোঝা যাবে। মাইক্রোফিন্যান্স লোনের ক্ষেত্রে ক্রেডিট ইন্সুইরেন্স নেওয়া অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ম্যান্ডেটরি এবং সেই ইন্সুইরেন্স-এর প্রসেসিং চার্জেস এবং প্রিমিয়াম কাটা যাবে লোন থেকেই [১০]। এছাড়াও বেদিকা, ভিলেজ, উত্তরায়ণ প্রভৃতি আরো কিছু মাইক্রোক্রেডিট সংস্থার JLG (Joint Liability Group) বা SHG-র লোনের সাথে যুক্ত হয় গ্রুপ ফর্মেশন এবং ট্রেনিং চার্জেস [১১]। ফিল্ড এজেন্টরা বাড়িতে গিয়ে বা পরদিন লোন কালেক্ট করলে (যদি লোন গ্রহীতা যে বাড়িতে লোনের গ্রুপ চলছে সেই বাড়িতে লোন নির্দিষ্ট সময়ে জমা দিয়ে আসতে না পারে) একটা অতিরিক্ত কালেকশন চার্জ নেন আন অফিসিয়ালি এবং এটার সেই নির্দিষ্ট কিস্তির ক্ষেত্রে এবং লোনের স্টেটমেন্টে কোনো উল্লেখ থাকে না।  

এরপরে আসা যাক লোনের ইন্টারেস্টের বিষয়ে। MFI-গুলো বেশিরভাগই NBFC। তারা RBI-তে রেজিস্টার্ড, কিন্তু আসলে প্রাইভেট ফিনান্স কোম্পানি। তাদের প্রধান লক্ষ্য মুনাফা অর্জন। MFI-এর সুদের হার খুবই বেশি - ২৬% থেকে ১২০% পর্যন্ত [৯]! কর্পোরেটদের বিনিয়োগে সবচেয়ে বেশি রিটার্ন আসে MFI-থেকে, আর তার ভিত্তিতেই গরিব মহিলাদের উপর এই লুটপাট ন্যায্যতা পায়। মাইক্রো ক্রেডিট এখন কর্পোরেটদের শোষণের হাতিয়ার হয়ে উঠেছে। আগে সুদের হার ২৬%-এ সীমাবদ্ধ ছিল। MFI-গুলো তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানালে সুদের সীমা তুলে দেওয়া হয় [১২]। কিছু প্রতিষ্ঠিত সংস্থা ২৬-২৭℅ ইন্টারেস্ট নেয়, আবার কিছু সংস্থা যেমন সূর্য্য ফিন্যান্স, সম্পূর্ণা, উত্তরায়ণ বিভিন্ন লোনে ৬০℅ থেকে ৮০%,  এমনকি কিছু সংস্থা ১০০ %-এর উপর বার্ষিক সুদ নিয়েছে, যার যথেষ্ট প্রমাণ আছে। অন্যদিকে RBI, কিস্তি মিস করলে যে লেট পেমেন্ট ফি মাইক্রোফিন্যান্স সংস্থাগুলো নিয়ে থাকে, তার উপরও কোনো ক্যাপ সেট করেনি কিন্তু সেই লেট পেমেন্ট ফি-এর ক্ষেত্রে RBI জানিয়েছে যে সেই ফি যেন যুক্তিযুক্ত হয় এবং তা যেন গ্রহীতাকে আগে থেকেই জানানো হয় [১৩]। একই সাথে তা শুধু ওভারডিউ অ্যামাউন্টের উপরই অ্যাপ্লাই করতে হবে, এই সতর্কবার্তা দেওয়া হয়। যেহেতু নির্দিষ্ট সর্বোচ্চ সীমা নেই, তাই বাস্তবে দেখা যায় - বেশিরভাগ NBFC-MFI মাসে বকেয়া অর্থের উপর প্রায় ১% থেকে ৩% হারে পেনাল্টি ধার্য করে [১৪]। উদাহরণস্বরূপ, যদি আপনি ১,২০০ টাকার একটি কিস্তি পরিশোধে ব্যর্থ হন, তাহলে ২% হারে পেনাল্টি হবে ২৪ টাকা। এই পেনাল্টির দু'রকম অপব্যবহার চলে। এক, ছোট ওভারডিউ-এর ক্ষেত্রে পেনাল্টি ৩% হলেও বড় পরিমাণ EMI-এর ক্ষেত্রে তার পরিমাণ অনেক বেড়ে যায়। একইসাথে যে ম্যালপ্র‍্যাক্টিস এখানে হয় যে ওভারডিউ হিসাবে আগের মাসের আসল, সুদ এমনকি পেনাল্টির অ্যামাউন্টের উপরেও দ্বিতীয়বার পেনাল্টি বসানো হয়। 

মাইক্রোফিন্যান্সের আরেকটি টাকা রোজগারের বড় হাতিয়ার হচ্ছে weekly এবং quarterly EMI সিস্টেম যেখানে মাসিক EMI-কে ভেঙে সাপ্তাহিক বা মাসে দুবার EMI নেওয়া হয় [১৫]। এখন সাপ্তাহিক বিষয়ে RBI-এর বাধা না থাকলেও বিধি আছে। RBI-এর guidelines বলে EMI মাসিক হবে না সাপ্তাহিক সেই সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণরূপে ঋণ গ্রহীতা ঠিক করবে এবং সাপ্তাহিক লোন দিতে না পারলে সেটা মাসিকভাবে গ্রহণের ব্যবস্থা করতে হবে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায়, একটি লোন সাপ্তাহিক বা ১৫ দিন ব্যাপী হবে কিনা সেটা গ্রুপের মাধ্যমে গ্রহীতার উপর চাপিয়ে দেওয়া হয়। সেখানে প্রশ্ন ওঠে যে কোন অধিকারে এই সংস্থাগুলি গ্রহীতাকে সাপ্তাহিক লোনই দিতে হবে বলে বাধ্য করে এবং লোন দিতে না পারলে হুমকি দেয়, যেখানে নিয়ম অনুযায়ী গ্রহীতা মাসিক কিস্তি হিসাবেও সেই লোন পরিশোধ করতে পারেন। অন্যদিকে সাপ্তাহিক লোন দিতে মিস করলে তার উপর পেনাল্টি নেওয়া RBI-এর নিয়ম নিয়ে তামাশা করা ছাড়া আর কি? ফলে দেখা যাচ্ছে, RBI মাইক্রোক্রেডিটের ওপর যে খুল্লা ছুট দিয়েছে তার ফলে মাইক্রোফিন্যান্স সংস্থাগুলো এই সিক্কা কায়েম করেছে। RBI বন্ধন ব্যাংককে 'fradulent and fund monitoring'-এর বিষয়ে জরিমানা করলেও লোনগ্রহীতার সুরক্ষার বিষয়টি দেখেননি কারণ বাস্তবের মাটিতে যাই হোক এবং সেটা সবাই জানলেও, খাতায় কলমে সব ঠিকাছে [১৬]।

মানুষও বাধ্য হচ্ছে দিনের পর দিন এই ডেট ট্র‍্যাপে জড়িয়ে পড়তে। যে দেশে এবং রাজ্যে পড়াশুনা শিখে কোনো চাকরি নেই, যা আছে তাও কন্ট্রাক্টচুয়াল-এর আট হাজারী বেতন, সেখানে এটা হওয়াই স্বাভাবিক। আসলে কোভিডের পর থেকে গ্রাম আর মফস্বলি এলাকাগুলো আর উঠে দাঁড়াতে পারেনি। গ্রামগুলোতে ভোগপণ্যের জন্য মানুষের ব্যয় এই দু'বছরে বেড়েছে মাত্র ২.৭% [১৭]৷ আসলে এই চাহিদা হ্রাস আর কিছুই না বরং করোনায় কাজ চলে যাওয়ার পরে নতুন করে সেই অর্থে কাজের সংস্থান হয়নি এবং এই স্বল্প আয়ের মধ্যেও করোনার সময় থেকে শুরু হওয়া মাইক্রোফিন্যান্সের দেনা পরিশোধ করতে করতে তারা আজও পেটে খিল দিয়ে পড়ে আছেন।

এখন যদি একটা সার্ভে করা যায় তবে দেখা যাবে অধিকাংশ মাইক্রো ক্রেডিট লোন যা চলছে তা প্রকারান্তরে লকডাউনে নেওয়া লোনই। লকডাউনের সময় মাইক্রোফিন্যান্স কোম্পানিগুলি লোন পরিশোধ করার নামে একটা পলিসি নিয়ে আসে যাতে লোন তো পরিশোধ হয় কিন্তু তার জায়গায় আরেকটা বড়ো লোন চলে আসে৷ এতে করে একদিকে তাদের NPA ক্লিয়ার হয়ে যায়, অন্যদিকে লোনগ্রহীতার জন্য ৮০,০০০ টাকার লোন হয়ে ওঠে ১৫,০০০০ টাকা। আর আগের লোনের পেনাল্টি সহ পরিশোধ করার পর এবং পুনরায় ইন্স্যুরেন্স চার্জ কাটবার পরে হাতে আর কিছুই আসে না। EMI দেওয়ার পর শুধু ইন্টারেস্ট এবং পেনাল্টি কাটার চল রয়েছে এবং এতে আসলের কিছুই শোধ হয় না। RBI বলে, প্রতি কিস্তিতে নির্দিষ্ট লোনের আসল এবং মূলধন যুক্ত থাকতে হবে। যা ঘটে তা এই নিয়মের পরিপন্থী। একইসাথে লোনগ্রহীতা যদি চায় সে EMI-টাকে কমিয়ে লোনের টেনিউর বাড়াতে বলতে পারে, সেই নিয়মও এই মাইক্রোফিন্যান্স সংস্থাগুলি মানে না। একটা গ্রুপে ৬ মাস অন্তর অন্তর নতুন লোনের অফার দেওয়া হয় এবং গ্রুপের মেম্বাররা সেই লোন না নিলে তারা পরবর্তীতে আর সেই গ্রুপের মেম্বার থাকতে পারবে না। তাদের জায়গায় নতুন মেম্বার আনা হয় এবং পরবর্তীকালে প্রয়োজন পড়লে তারা সেই গ্রুপ থেকে আর লোন পাবে না। 

এখন আমরা দেখব কিভাবে স্থানীয় সিস্টেম এই মাইক্রোফিন্যান্সের দিকে ঠেলে দেয়। গ্রামের দিকে JLG বা SHG গ্রুপগুলোর মাধ্যমে ট্রাক্টর ও পাম্প দেওয়া হয় [১৮]। কখনো বা কোনো মেশিন মাইক্রোফিন্যান্সের আওতায় ফেলে  স্বামী-স্ত্রী,  দিদি-ভাই (একজন মহিলা এবং তার সম্পর্কিত একজন পুরুষ যার জিনিসটা কাজের জন্য লাগবে)-দের নিয়ে ১০-১২ জনের গ্রুপ বানানো হয়। প্রতি মাসে বা সাপ্তাহিক EMI দিতে হয়। এবার আসি শহরতলীতে। ধরুন আপনি পয়সা জমিয়ে একটা টোটো কিনতে চান। টোটোর লাইসেন্স-এর জন্য দরখাস্ত করতে হবে (যদিও electronic vehicle হওয়ার দরুণ টোটোর লাইসেন্স হয় না, কিন্তু শাসক দল ঘনিষ্ঠ ইউনিয়ন মারফৎ টাকার বিনিময় আনরেজিস্টার্ড নম্বর প্লেট দেওয়া হয়) এবং ক্রমিক সংখ্যা অনুযায়ী নম্বর এলে দুদিনের মধ্যে ৩০,০০০ টাকা জমা করতে হবে। এখন এত অল্প সময়ে এই টাকা জোগাড় করার উপায়ও শাসক দল ঘনিষ্ঠ ইউনিয়ন লিডারই দেবেন। তিনি তার স্ত্রী বা অন্য পরিচিতের মারফৎ আবার কোনো মাইক্রোফিন্যান্সের মধ্যে টোটো অ্যাপ্লিক্যান্ট-এর স্ত্রী বা পরিবারের অন্য কোনো মহিলাকে ঢুকিয়ে দেবেন। এই পরিস্থিতিতে এমন লোন নিতে হয় যাতে না গ্রহীতার পূর্ণরূপে প্রয়োজন মেটে, না তারা সেই লোন নিতে চান বরং কিছুটা বাধ্য হয়েই নিতে হয়। বাজাজ, L&T-এর মতো সংস্থাগুলো ফ্রিজ, TV-র মত ইলেকট্রনিকস গুডসের জন্যও গ্রুপ লোন চালায়। এরা মাঝে মাঝে অফার দেয় যে ১৫,০০০ টাকার ফোন এবং ২০,০০০ টাকা ক্যাশ পাওয়া যাবে। যার ৩০,০০০ টাকা দরকার টোটোর তথাকথিত লাইসেন্স ফি দেওয়ার জন্য, তিনি বাধ্য হন এই ২০,০০০ টাকা আর সাথে ফোনটা নিতে যাতে তার প্রয়োজন মেটে না, ফলে আবার ধার! একইসাথে একটা টোটোর দাম ১২,০০০০ থেকে ১৫,০০০০ টাকা।আগে থেকে জমানো না থাকলে বা হঠাৎ করে লাইসেন্সের নম্বর চলে এলে আরো অনেকগুলো মাইক্রোফিন্যান্স বা সুদখোরের কবলে গিয়ে পড়তে হয়। ফলে লোকাল অথরিটিগুলো এইভাবেই শ্রমজীবী মানুষকে মাইক্রোফিন্যান্সের মধ্যে জড়িয়ে পড়তে বাধ্য করছে।

মার্কিন ক্রেডিট কার্ড বা প্লাস্টিক মানিকে যখন সকল স্তরে ঢুকিয়ে দেওয়া গেল না তখন প্রয়োজন পড়ল এই মাইক্রোফিন্যান্স-এর। একজন বিখ্যাত ধনকুবের রবার্ট কিয়োসাকি বলেছিল যে ক্রেডিট কার্ড তাদেরই নেওয়া উচিৎ যাদের ক্রেডিটের প্রয়োজন নেই। ফাটকা বাজারের তৈরী করা অর্থনৈতিক ফানুশ ফাটলে যে বিশ্বব্যাপী মন্দা সৃষ্টি হয়, সেই মন্দার বোঝা চুকিয়ে চলেছে সাধারণ মানুষ তাদের শ্রমের সঠিক মজুরি থেকে বঞ্চিত হয়ে, লোনার বোঝা টেনে। মানব শ্রমের কাছে পুঁজির দেনা এইভাবেই আরো বেড়ে চলেছে। ২০০৮ সালে ক্রাইসিস-এর পর মাইক্রোফিন্যান্স সংস্থাগুলো তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে অর্থনীতি উদ্ধারের নামে ছড়িয়ে পড়ে। তাই এখানে বেড়ে চলেছে মাইক্রোফিন্যান্সের কারণে গ্রামে ও শহরে আত্মহত্যা। এর উপর কোনো সার্ভে না থাকার কারণে কোনো পরিসংখ্যান নেই। "স্যার"-এর গলাধাক্কা খেয়ে কতজন আত্মহত্যা করেন আবার মাইক্রোফিন্যান্স ও সুদখোরদের হাত থেকে বাঁচতে বসতভিটে ছেড়ে কতজন অন্য কোথাও গিয়ে বসবাস করে। 

মাইক্রোফিন্যান্সের কবল থেকে মুক্তির উপায়  

মাইক্রোফিন্যান্সের এই সমস্যা দেশজুড়ে চলা ঘটনা। বিহার, তামিলনাড়ু, কর্ণাটক, পশ্চিমবঙ্গ ও মহারাষ্ট্র প্রধানত এফেক্টেড। কেরালায় Kudumbashree প্রকল্পে মহিলারা সরকারী ঋণ পান, তাই হয়রানির শিকার হতে হয় না। এই মডেলটি সমবায় পরিচালনার অংশ। তামিলনাড়ুতে মহিলাদের উপর হয়রানির অভিযোগ RBI-এর ওম্বাডসম্যান-এর কাছে করে MFI-গুলোকে নিয়ন্ত্রণে আনার আদেশ আদায় করেছে বামপন্থী মহিলা সংগঠন AIDWA (All India Democratic  Women's Association) [৯]।    

পশ্চিমবঙ্গে ২০১২-১৩ সাল থেকেই গ্রামের দিকে SHG-র মাধ্যমে মাইক্রোফিন্যান্স ঢুকে গেছিল। সেই সময়ে এ রাজ্যে AIDWA-র কিছু আঞ্চলিক শাখায়ও মাইক্রোফিন্যান্স-এর প্রভাব বিস্তার শুরু হয়। এই মহিলা সমিতির কিছু আঞ্চলিক শাখার নেত্রীরা নিজেরাই মাইক্রোফিন্যান্স সংস্থার গ্রুপ লিডার! এটা এই সংগঠনের সাধারণ প্রবণতা নয়। ফলে এই বামপন্থী মহিলা সংগঠনের আত্মসমীক্ষার প্রয়োজন রয়েছে। তাদের সাংগঠনিক স্ক্রুটিনি করে এই সব আগাছাদের সদস্যপদ বাতিল করার প্রয়োজন রয়েছে। 

মাইক্রোফিন্যান্সের দেনাকে সরকারি হস্তক্ষেপে রাইট অফ করতে হবে। লোন গ্রহীতাদের দেনা মুকুব করতে হবে। একইসাথে উঠে আসে কর্মসংস্থানের প্রসঙ্গ। লোকের হাতে কাজ থাকলে ধার নেওয়ার প্রয়োজন কমে। মাইক্রোফিন্যান্স সংস্থাগুলোর উপর কঠোর রেগুলেশন আনতে হবে। ইন্টারেস্ট ও চার্জেস বেঁধে দিতে হবে। সরকারী নির্দেশ না মানা হলে এই সংস্থাগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর আইনি প্রক্রিয়া চালাতে হবে। ক্রমে ক্রমে MFI-গুলো বন্ধ করতে হবে। সরকারি সহায়তায় সমবায়ভিত্তিক লোন প্রদানের ব্যবস্থা করতে হবে। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোকে কম সুদে ঋণ দিতে হবে। এই দাবীগুলো আদায়ের জন্য প্রয়োজন মাইক্রোফিন্যান্স পীড়িতদের আন্দোলন। নইলে আজকের এই "Shylock"-রা  মানুষের বেঁচে থাকার সমস্ত রসদটুকু কেড়ে নেবে। 

তথ্যসূত্র

১। https://www.jstor.org/stable/25830785

২। https://en.wikipedia.org/wiki/Kenya_Finance_Bill_protests

৩। https://thediligent2018.blogspot.com/2024/08/blog-post_26.html

৪। https://mfinindia.org/assets/upload_image/publications/AnnualReports/MFIN%20AR%202023-2024

৫। https://m.economictimes.com/industry/banking/finance/mfi-portfolio-touches-rs-4-lakh-crore-across-india/articleshow/108137026.cms?

৬। https://economictimes.indiatimes.com/industry/banking/finance/microfinance-institutions-profitability-to-rise-to-2-7-3-per-cent-this-fiscal-report/articleshow/

৭। https://www.reuters.com/world/india/indian-banks-loan-growth-slows-eighth-straight-month-february-rbi-data-shows-2025-03-27/

৮। https://rbidocs.rbi.org.in/rdocs/PublicationReport/Pdfs/YHMR190111.pdf

৯। AIDWA to Hold Public Hearing on Loot by Micro Finance Institutions - Mariam Dhawale, People's Democracy, Vol. XLIX, No. 12

১০। https://www.rbi.org.in/commonman/english/scripts/FAQs.aspx?Id=3366

১১। https://www.nabard.org/auth/writereaddata/tender/1202181510TransactionCostPerspectiveofSHGandMFIClientsH.pdf

১২৷ https://m.economictimes.com/industry/banking/finance/rbi-removes-lending-rate-cap-on-nbfc-mfis-changes-microfinance-definition/articleshow/90199644.cms

১৩। https://www.millenniumpost.in/business/microfinance-lenders-cannot-charge-usurious-interest-rate-rbi-471192

১৪। https://www.thehindubusinessline.com/money-and-banking/rbi-issues-fresh-instructions-on-penal-charges-in-loan-accounts/article67208546.ece?utm_source=chatgpt.com

১৫। https://www.rbi.org.in/commonman/English/Scripts/FAQs.aspx?Id=325

১৬। https://m.economictimes.com/industry/banking/finance/banking/rbi-imposes-penalty-on-bank-of-india-bandhan-bank/articleshow/108470008.cms

১৭। https://www.reuters.com/world/india/india-household-spending-non-food-items-rises-urban-rural-gap-narrows-2024-12-27/

১৮। https://agriculture.institute/institutional-support/exploring-microfinance-shg-bank-linkage-india/

Picture Courtesy: Copilot Google AI



Comments

Popular posts from this blog

ঘটনার বিবরণ নয়, উপলব্ধি জরুরী; প্রসঙ্গ আর.জি.কর

বর্তমান সময়ে বাম ঐক্যের প্রয়োজনীয়তা

আম্বেদকরের চোখে - কেন ব্রাহ্মণ্যবাদ শাকাহারী পথ গ্রহণ করল? গো ভক্ষণ নিষিদ্ধকরণের সাথে অস্পৃশ্যতার কি সম্পর্ক রয়েছে?